বাংলা সহায়ক

মাধ্যমিক ইতিহাস




প্রথম অধ্যায় - ইতিহাসের ধারণা

                বিভাগ ‘ক’
(১) সঠিক উত্তরটি নির্বাচন কর :-
(১.১) ভারতে নিম্নবর্গীয় (সাব-অলটার্ন) ইতিহাস চর্চার জনক -
ক) ড: রমেশচন্দ্র মজুমদার খ) ড: সুরেন্দ্রনাথ সেন গ) ড: রণজিৎ গুহ ঘ) ড: রমেশচন্দ্র দত্ত
উত্তর :- গ) ড: রণজিৎ গুহ
(১.২) ইন্দিরা গান্ধীকে লেখা জহরলাল নেহেরুর চিঠি গুলির হিন্দু অনুবাদ করেছেন –
(ক) মুন্সি প্রেমচাঁদ                                                    ( ১.৩) ভারতে প্রথম চলচ্চিত্র হলো –
 উত্তর:- (গ) রাজা হরিশ্চন্দ্র ।
(১.৪) বঙ্গদর্শন প্রত্রিকাটি কবে প্রকাশিত হয় –  উত্তর:- (ঘ) ১৮৭২ সালে
(১.৫) ‘জীবনস্মৃতি’ গ্রন্থটি কার রচনা –   
উত্তর:- (ঘ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
(১.৬) ইতিহাসের জনক কাকে বলা হয় –  
উত্তর:- (গ) হেরোডোটাসকে ।
(১.৭) হিন্দু মেলার প্রবর্তন করেন – 
উত্তর:- (খ) নবগোপাল মিত্র ।
(১.৮) ভারতে ‘চিপকো আন্দোলন’ ছিল –
উত্তর:- (খ) পরিবেশ আন্দোলন ।
(১.৯) নীলকরদের অত্যাচারের তথ্য পাওয়া যায় –
উত্তর:- (ঘ) সোমপ্রকাশ পত্রিকা 
(১.১০) ‘বন্দে মাতারম’ সংগীত টি প্রথম প্রকাশিত প্রকাশিত হয় 
উত্তর:- (গ) বঙ্গদর্শন পত্রিকায় ।
( ১.১১) ভারতে ফুটবল⚽ খেলার প্রবর্তন করে --
উত্তর : ক) ইংরেজরা
(১.১২)  "কেকের দেশ"-- বলা হয়--- স্কটল্যান্ডকে
(১.১৩)  " বাঙালীর ইতিহাস "--- গ্রন্থের রচয়িতা  --- নীহাররঞ্জন রায়।
(১.১৪)  "একেই বলে শুটিং" ----- সত্যজিৎ রায়।  "জীবনের জলসাঘরে"--- মান্না দে।
(১.১৫)  ভারতের প্রথম নির্বাক ছবি ---- রাজা হরিশ্চন্দ্র। বাংলা ভাষায় ---- বিল্বমঙ্গল।
(১.১৬) বাংলার প্রথম সবাক ছবি ----- জামাইষষ্ঠী (১৯৩১)  ।  হিন্দি ---- আলম আরা।
(১.১৭)  "এ হিস্ট্রি অফ হিন্দু কেমিস্ট্রি" গ্রন্থের রচয়িতা --- আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়

আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ :

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -------- জীবনস্মৃতি
বিপিনচন্দ্র পাল ---------- সত্তর বৎসর
সরলাদেবী চৌধুরানি ------- জীবনের ঝরাপাতা
মহাত্মা গান্ধি -------- দ্য স্টোরি অফ মাই এক্সপেরিমেন্ট উইথ ট্রুথ
সুভাষচন্দ্র বসু ----- অ্যান ইন্ডিয়ান পিলগ্রিম
জওহরলাল নেহেরু ------- অ্যান অটোবায়োগ্রাফি
মণিকুন্তলা সেন -------- সেদিনের কথা
দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় ------ ছেড়ে আসা গ্রাম

   বিভাগ ‘খ’
(২) প্রতিটি উপবিভাগ থেকে অন্তত একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে :-
উপবিভাগ ২.১
** একটি বাক্যে উত্তর দাও:-
(২.১.১) ভারতবর্ষের প্রথম ইতিহাস গ্রন্থ কোনটি ?        উত্তর:- রাজতরঙ্গিনী ।
(২.১.২) সোমপ্রকাশ পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন ?   উত্তর:- দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ ।
(২.১.৩) প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকা কোনটি ?        উত্তর:- সমাচার দর্পণ ।
(২.১.৪) বাংলার মাটি বাংলার জল গানটি কে রচনা করেন ।   উত্তর:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
উপবিভাগ ২.২
** ঠিক না ভুল নির্ণয় কর :-
(২.২.১) খাদ্যাভাস পোশাক-পরিচ্ছেদ প্রভৃতি থেকে মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার আভাস পাওয়া যায় ।      উত্তর:- ঠিক ।
(২.২.২) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  অগ্রন্থির ইতিহাস হলো স্থানীয় ইতিহাস চর্চার একটি উদাহরণ ।উত্তর:- ঠিক 
(২.২.৩) কৌশিক রায় সামরিক ইতিহাস চর্চার সঙ্গে যুক্ত  ।     উত্তর:- ঠিক ।
(২.২.৪) ব্রিটিশ আমলের বিভিন্ন সরকারি নথিপত্র দিল্লির জাতীয় মহাফেজখানায় সংরক্ষিত আছে।উত্তর:- ঠিক।

উপবিভাগ ২.৩
** ক স্তম্ভের সঙ্গে খ স্তম্ভ মেলাও :-
ক স্তম্ভ                             খ স্তম্ভ
(২.৩.১) সোমপ্রকাশ           (১) দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ
(২.৩.২) হিন্দু প্যাট্রিয়ট       (২)হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
 (২.৩.৩) সঞ্জীবনী               (৩) কৃষ্ণ কুমার মিত্র
(২.৩.৪) ইয়ং ইন্ডিয়া           (৪) বিপিন চন্দ্র পাল
৫. দিগদর্শন, সমাচার দর্পণ--- ৫. মার্শম্যান
৬.বঙ্গদর্শন ------ ৬. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৭. সংবাদ প্রভাকর ------- ৭. ঈশ্বরগুপ্ত
উত্তর : সঠিকভাবে মেলানো আছে।

উপবিভাগ ২.৪
** নিম্ন লিখিত বিবৃতিগুলির সঙ্গে সঠিক ব্যাখ্যাটি নির্বাচন কর:-
(২.৪.১) বিবৃতি :- ইতিহাস কেবল অতীত কাহিনী নয় ।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ৩ :- ইতিহাস বস্তু ও প্রমাণ নিষ্ঠ অতীতের বিবরন।
(২.৪.২) বিবৃতি :-সঙ্গীত দেশ কালভেদে নানা রূপ নেয় ।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ২ :- নানা দেশে নানা সময়ে বিভিন্ন সঙ্গীতের ধারার প্রচলন দেখা যায় ।
(২.৪.৩) বিবৃতি  :- সমাজবদ্ধ মানুষের ইতিহাস রচনা    কঠিন কাজ’ ।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ২ :- মানুষের সমাজ জীবন বড় বিচিত্র ।
(২.৪.৪) বিবৃতি  :- চিঠি সব সময় বেঁচে থাকে ।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ২ :- চিঠিগুলি সংরক্ষিত করলে তার অন্তর্নিহিত বিষয়বস্তু সংরক্ষিত থাকে ।
         
     বিভাগ ‘গ’
(৩) দুটি অথবা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :-

(৩.১)  নতুন সামাজিক ইতিহাস বলতে কী বোঝো ?
উত্তর : বর্তমানকালে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে ইতিহাস চর্চা শুরু হয়েছে তাই নতুন সামাজিক ইতিহাস নামে পরিচিত । ইতিহাস এখন শুধুমাত্র রাজা-মহারাজা নয় নিম্নবর্গীয় মানুষও সমান গুরুত্ব পাচ্ছে।
(৩.২) নতুন সামাজিক ইতিহাসের প্রধান আলোচ্য বিষয় গুলি কি ?
উত্তরঃ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে  ইতিহাস চর্চা । সমাজ জীবনের বিভিন্ন পরিসরে আপাত ঘটনাগুলোও গুরুত্ব পায়।
(৩.৩) আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার প্রধান উপাদান গুলি কী কী ?
উত্তর : আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনার প্রধান উপাদানগুলি হল সরকারি নথিপত্র, আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা ,চিঠিপত্র ,সাময়িকপত্র ,সংবাদপত্র প্রভৃতি।
(৩.৪) ইতিহাসের উপাদান রূপে চিঠিপত্রের গুরুত্ব কী ?
উত্তর : সরকারের বিভিন্ন দপ্তর উচ্চপদস্থ কর্মচারী সামরিক দপ্তরের অফিসার প্রমুখের চিঠিপত্রে ঐতিহাসিক ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় । এরূপ বহু চিঠিপত্র সংরক্ষিত আছে । এগুলি আধুনিক ইতিহাস চর্চার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান । উদাহরণ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চিঠিপত্র।
(৩.৫) স্মৃতিকথা অথবা আত্মজীবনীকে কীভাবে আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান ব্যবহার করা হয়  ?
উত্তর : আত্মজীবনী এবং স্মৃতিকথায় সমকালীন প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতার কথা উঠে আসে। সরকারি নথিপত্রে যা উল্লেখ থাকে না, সে বিষয়গুলি আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় অকপটে আলোচিত হয় বলে এগুলি আধুনিক ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আধুনিক ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "জীবনস্মৃতি", বিপিনচন্দ্র পালের 'সত্তর বৎসর' এবং সরলা দেবী চৌধুরানীর 'জীবনের ঝরাপাতা'।
(৩.৬) পরিবেশের ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন ? 
উত্তর : মানব সভ্যতার উপর পরিবেশের প্রভাব এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের প্রতিক্রিয়া এখন ইতিহাস চর্চার আলোচ্য বিষয় । পরিবেশ সম্পর্কিত বিভিন্ন আন্দোলন যেমন- চিপকো আন্দোলন, নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন ইতিহাস চর্চার ফসল।
(৩.৭) সোমপ্রকাশ থেকে সমসাময়িক ভারতের কী কী তথ্য পাওয়া যায় ?
উত্তর : নীলকর সাহেবদের অত্যাচারে বাংলার কৃষকদের দুরবস্থার কথা জানা যায় । বিধবা বিবাহ প্রচলন ও স্ত্রী শিক্ষার প্রসারের বিষয়ে সমকালীন শিক্ষিত বাঙালি সমাজের ভাবনা-চিন্তা জানা যায়।

                       ‘ঘ’
(৪) সাত বা আটটি টি বাক্যে প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(৪.১) ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা গুলি উল্লেখ কর ।(৪.২) নারী ইতিহাস চর্চা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

 দ্বিতীয় অধ্যায় -  সংস্কার: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা
                   বিভাগ ‘ক’
১) সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
১.১) ঔপনিবেশিক ভারতের প্রথম পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার ঘটে--
উত্তর : বাংলায়
১.২) 'নীলদর্পণ' নাটকটি রচনা করেন --
উত্তর : খ) দীনবন্ধু মিত্র
১.৩  গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন
উত্তর : ক) হরিনাথ মজুমদার।
১.৪) "হুতোম প্যাঁচার নকশা" গ্রন্থটি রচনা করেন –
উত্তর: (গ) কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.৫) এশিয়াটিক সোসাইটি (১৭৮৪) প্রতিষ্ঠা করেন –
উত্তর: (গ) স্যার  উইলিয়াম জোনস
১.৬) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আচার্য ছিলেন –
উত্তর: (ঘ) লর্ড ক্যানিং
✍ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভারতীয় উপাচার্য ছিলেন ---স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
✍ সতীদাহ প্রথা রদ হয় --- ১৮২৯ সালে।
১.৭) বিধবা বিবাহ আইন প্রণীত হয় –
(ক) ১৮৫০ সালে (খ) ১৮৫৬ সালে (গ) ১৯০৫ সালে (ঘ) ১৯১১ সালে।
উত্তর: (খ) ১৮৫৬ সালে
১.৮) নব্যবঙ্গ আন্দোলনের প্রাণ পুরুষ ছিলেন –
(ক) রসিক কৃষ্ণ মল্লিক (খ) রামগোপাল ঘোষ (গ) দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় (ঘ) ডিরোজিও।
উত্তর: (ঘ) ডিরোজিও
 ১.৯) আধুনিক ভারতের জনক বলা হয় –
(ক) ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কে (খ) রাজা রামমোহন রায় কে (গ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে (ঘ) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর কে।
উত্তর: (খ) রাজা রামমোহন রায়কে
১.১০) যত মত তত পথ এর আদর্শ প্রচার করেন –
(ক) স্বামী বিবেকানন্দ (খ) শ্রী রামকৃষ্ণ (গ) বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী (ঘ) লালন ফকির।
উত্তর: (খ) শ্রী রামকৃষ্ণ
১.১১) হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় –
উত্তর: (খ) ১৮১৭ সালে
১২. বামাবোধিনী সভা -- উমেশচন্দ্র দত্ত। বিদ্যোৎসাহিনী সভা ---- কালী প্রসন্ন সিংহ।
১৩) বামাবোধিনী পত্রিকা-- উমেশচন্দ্র দত্ত ।   হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা---- হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়।
১৪) নীলদর্পণ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন -- মাইকেল মধুসূদন দত্ত  । প্রকাশ করেন --জেমস লং।
১৫) নববিধান ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন--- কেশব চন্দ্র সেন।
১৬) পাশ্চাত্য শিক্ষার ম্যাগনাকার্টা বা মহাসনদ ----- উডের ডেসপ্যাচ।
১৭) বামাবোধিনী পত্রিকা প্রকাশের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল -- নারী সমাজের কথা তুলে ধরা ।
১৮) মেকলে মিনিট পেশ করা হয় ---১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে ।
১৯) নব বৈষ্ণব ধর্মের প্রবক্তা ছিলেন---- বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী ।
২০) ভারতের প্রথম মহিলা চিকিৎসক ছিলেন -----কাদম্বিনী গাঙ্গুলী ।
২১) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা স্নাতক--- কাদম্বিনী গাঙ্গুলী।
২২) নব্য বেদান্ত বাদ প্রচার করেন ----
 স্বামী বিবেকানন্দ।
২৩) হিন্দু মেলার পূর্ব নাম ছিল ---  চৈত্র মেলা ।
২৪) উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণকে এলিটিস্ট আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন ---  অনিল শীল ।
২৫) শিক্ষার ক্ষেত্রে চুইয়ে পড়া নীতিটি হলো ----
 টমাস মেকলের।
২৬) সপ্তদশ আইন দ্বারা যে কোন প্রথার অবসান ঘটানো হয় তার নাম--- সতীদাহ প্রথা।
২৭) প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হত ---- ফোর্ট উইলিয়াম কলেজকে।
২৮) ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম মহিলা কলেজ ---- বেথুন কলেজ।
২৯) অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন -- ডিরোজিও
৩০) ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ ---- ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ।  কলকাতা মেডিকেল কলেজ --- ১৮৩৫.

                 বিভাগ ‘খ’
২) যেকোনো 16 টি প্রশ্নের উত্তর দাও (প্রতিটি উপ বিভাগ থেকে অন্তত একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে):-
উপ বিভাগ: ২.১
** একটি বাক্যে উত্তর দাও:-
২.১.১) ব্রাহ্ম সমাজ কে প্রতিষ্ঠা করেন?    উত্তর: রাজা রামমোহন রায়
২.১.২) শ্রীরামপুর ত্রয়ী নামে কারা পরিচিত?
উত্তর: উইলিয়াম কেরি, ওয়ার্ড ও মার্শম্যান
২.১.৩) কে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?   উত্তর: লর্ড ওয়েলেসলি (১৮০০)
২.১.৪) ভারতের প্রথম বালিকা বিদ্যালয় কোনটি?       উত্তর: হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়

উপ বিভাগ: ২.২
** ঠিক বা ভুল নির্ণয় করা:-
২.২.১) ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ১৮১৩ সালে charter act বা সনদ আইনের দ্বারা সিদ্ধান্ত নেয় যে কোম্পানি প্রতিবছর এক লক্ষ টাকা ভারতীয় শিক্ষার জন্য ব্যয় করবে।     উত্তর: ঠিক
২.২.২) হিন্দু পেট্রিয়ট পত্রিকাটি প্রথমে সাপ্তাহিক ছিল, পরে দৈনিকে রূপান্তরিত হয়।    উত্তর: ঠিক
২.২.৩) ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় বালিকা বিদ্যালয়ের সংখ্যা হয় ২৮৮ টি।   উত্তর: ঠিক
২.২.৪) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় মেডিকেল কলেজ বেঙ্গল নামে কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।     উত্তর: ঠিক

উপ বিভাগ ২.৩
** ক স্তম্ভের সঙ্গে খ স্তম্ভ মিলেও:
ক স্তম্ভ                         খ  স্তম্ভ
২.৩.১) শব ব্যবচ্ছেদ                  (ক) লর্ড বেন্টিং
২.৩.২) নব্যবঙ্গ                           (খ) লর্ড ক্যানিং
২.৩.৩) সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ       ( গ) ডিরোজিও
২.৩.৪) বিধবা বিবাহ প্রচলন       ( ঘ) মধুসূদন গুপ্ত
উত্তর: ২.৩.১) শব ব্যবচ্ছেদ – (ঘ) মধুসূদন গুপ্ত       ২.৩.২) নব্য বঙ্গ – (গ) ডিরোজিও
২.৩.৩) সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ- (ক) লর্ড বেন্টিং    ২.৩.৪) বিধবা বিবাহ প্রচলন – (খ) লর্ড ক্যানিং
উপ বিভাগ: ২.৫
** নিম্ন লিখিত বিবৃতি গুলোর মধ্যে সঠিক ব্যাখ্যা টি নির্বাচন করে:
২.৫.১) বিবৃতি: ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটেছিল।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: ভারতীয় মনীষীদের অনেকেই পাশ্চাত্য শিক্ষার অনুসারী ছিলেন।
২.৫.২) বিবৃতি: উনিশ শতকের ভারতে নবজাগরণ কথাটি মানানসই নয়।
উত্তর: ব্যাখ্যা ৩: নবজাগরণ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে স্পর্শ করেনি।
২.৫.৩) বিবৃতি: নীলদর্পণ নাটক ছিল সেকালের নীল বিদ্রোহের অন্যতম দলিল।
উত্তর: ব্যাখ্যা ২: এতে নীল বিদ্রোহের কাহিনী বিবৃত আছে।
২.৫.৪) বিবৃতি: রামমোহনের প্রচেষ্টায় সতীদাহ বিরোধী আইন পাশ হয়।
উত্তর: ব্যাখ্যা ২: রামমোহন কুসংস্কার বিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন।    
          
    বিভাগ ‘গ’
৩) দুটি অথবা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
১. বামাবোধিনী পত্রিকা কবে প্রকাশিত হয় ? এর প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন ?
উত্তর : বামাবোধিনী পত্রিকা প্রকাশিত হয় 1863 খ্রিস্টাব্দে । এই পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন উমেশচন্দ্র দত্ত।
২. বামাবোধিনী পত্রিকার গুরুত্ব কী ছিল ?
উত্তর : বামাবোধিনী পত্রিকার গুরুত্ব ছিল --এক :  বামাবোধিনী পত্রিকার প্রথম সংখ্যাতেই স্ত্রী শিক্ষা প্রচলনের দাবি করে। দুই : এই পত্রিকা বাল্যবিবাহের কুফল এবং বার্ধক্য বিবাহের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে। তিন : এই পত্রিকাতে মেয়েদের লেখা গল্প ও কবিতা প্রকাশিত হয়।
৩. হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন ? এই পত্রিকা থেকে কোন বিদ্রোহের কথা জানা যায়?
উত্তর : হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার  সম্পাদক ছিলেন হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ।
এই পত্রিকা থেকে নীল বিদ্রোহের কথা জানা যায়।
৪.  সাঁওতাল বিদ্রোহের প্রতি হিন্দু পেট্রিয়ট পত্রিকার কি মনোভাব  ছিল?
উত্তর: হিন্দু পেট্রিয়ট পত্রিকা সাঁওতাল বিদ্রোহকে পূর্ণ সমর্থন করে এবং সাঁওতাল এলাকায় সামরিক শাসন জারির তীব্র বিরোধিতা করে। এই পত্রিকায় সাঁওতালদের ওপর সীমাহীন শোষণের চিত্র নিয়মিত তুলে ধরা হয়।
৫. প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বাদী কাদের বলা হয় ?
উত্তর : জনশিক্ষা কমিটির সদস্য প্রিন্সেস ,কোলব্রুক,উইলসন প্রমুখ এদেশে প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য ও দর্শন বিষয়ে শিক্ষাদানের পক্ষপাতী ছিলেন । এরা প্রাচ্যবাদী নামে পরিচিত অপরদিকে মেকলে আলেকজান্ডার ডাফ কোলভিল প্রমুখেরা পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের সমর্থক হওয়ায় তারা পাশ্চাত্যবাদী নামে পরিচিত।
৬. প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বাদী দ্বন্দ্ব কী?
 উত্তর : ভারতে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করা উচিত এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের শাসনকালে জনশিক্ষা কমিটির সদস্যরা দুটি দলে বিভক্ত হয়ে যায়। একদল প্রাচ্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদান এবং অপর দল পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের পক্ষে মত দেন। এই নিয়ে  দুটি দলের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয় তা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বাদী দ্বন্দ্ব নামে পরিচিত।
৭. মেকলে মিনিট কী?
উত্তর : জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি টমাস মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের দাবি জানিয়ে 1835 খ্রিস্টাব্দে 2 ফেব্রুয়ারি বড়লাট লর্ড বেন্টিঙ্কের  কাছে একটি প্রস্তাব দেন, যা মেকলে মিনিট নামে পরিচিত । এই প্রস্তাবে বলা হয় যে প্রাচ্যের শিক্ষাব্যবস্থা খুব পিছিয়ে পড়া। এজন্য এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তন করা উচিত।
৮. চুঁইয়ে পড়া নীতি কী?
উত্তর : জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি লর্ড মেকলে তার মেকলে মিনিট প্রতিবেদনে বলেন যে জল যেমন উপর থেকে নিচের দিকে গড়িয়ে পড়ে তেমনি ভারতে উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটলে তা ক্রমশ সাধারণ জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। এই নীতি চুঁইয়ে পড়া নীতি নামে পরিচিত।
৯. কে কি উদ্দেশ্যে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ সিভিলিয়ানদের বাংলা ভাষা শিক্ষার জন্য  কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
১০. নব্য বঙ্গ গোষ্ঠী নামে কারা পরিচিত ? এই গোষ্ঠীর সদস্য কারা ছিলেন?
উত্তর :  ডিরোজিও ও তার শিষ্যরা নব্য বঙ্গ গোষ্ঠী বা ইয়ংবেঙ্গল নামে পরিচিত।
এই গোষ্ঠীর সদস্যরা হলেন কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় রামতনু লাহিড়ী মল্লিক মল্লিক প্যারীচাঁদ মিত্র প্রমুখ।
১১. নব্য বঙ্গ আন্দোলন বলতে কি বোঝ?
উত্তর: উনিশ শতকের প্রথমে ডিরোজিওর নেতৃত্বে তাঁর অনুগামী একদল যুবক বাংলার সমাজ সংস্কারের উদ্দেশ্যে এক আন্দোলনের সূচনা করেন । এই আন্দোলনে নব্য বঙ্গ আন্দোলন নামে পরিচিত।
১২. কে কবে সতীদাহ প্রথা নিবারণ করেন?
উত্তর : 1829 খ্রিস্টাব্দে 17 নম্বর রেজুলেশন আইন দ্বারা রাজা রামমোহন রায়ের সহায়তায় উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক নিষিদ্ধ করেন।
১৩. কে কবে বিধবা বিবাহ আইন পাশ করেন ?
উত্তর : বিদ্যাসাগরের আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে লর্ড ডালহৌসি 1856  খ্রিস্টাব্দে 26 জুলাই বিধবা বিবাহ আইন পাশ করেন।
১৪. কে কবে ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : রাজা রামমোহন রায় 1828 খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্ম সভা প্রতিষ্ঠা করেন। 1830 খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্মসভা ব্রাহ্মসমাজে পরিণত হয়।
১৫. তিন আইন কী ?
কেশব চন্দ্র সেনের দ্বারা ব্রিটিশ সরকার 1872 খ্রিস্টাব্দে তিন আইন পাশ করেন । এই তিন আইন বাল্যবিবাহ বহুবিবাহ নিষিদ্ধ হয় এবং বিধবা বিবাহ অসবর্ণ বিবাহ চালু চালু হয়।
 ১৬. শ্রীরামকৃষ্ণের সর্বধর্ম সমন্বয়ের মূল কথা কী ছিল  ?
শ্রীরামকৃষ্ণের সর্বধর্ম সমন্বয়ের মূল কথা হলো সকল ধর্মই সত্য । "যত মত তত পথ" আদর্শ প্রচার করে তিনি বলেন যে সাধনার সব পথই সত্য ও সঠিক । বৈষ্ণব,শাক্ত,হিন্দু, মুসলিম ,খ্রিস্টান প্রভৃতি সব ধর্মের সাধনার মধ্য দিয়েই ঈশ্বরকে লাভ করা সম্ভব।
১৭. ডেভিড হেয়ার কে ছিলেন?
উত্তর: উনিশ শতকে বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের এক উজ্জ্বলতম  ডেভিড হেয়ার । তিনি ছিলেন স্কটল্যান্ডের একজন ঘড়ি ব্যবসায়ী । তিনি স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।
১৮. ড্রিংকওয়াটার বিটন কে ছিলেন?
উত্তর: বড়লাটের শাসন পরিষদের আইন সদস্য ও বাংলা শিক্ষা কাউন্সিলের সভাপতি ড্রিংকওয়াটার বিটন বা বেথুন সাহেব ছিলেন একজন ব্রিটিশ কর্মচারী। তিনি বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বর্তমানের বেথুন স্কুল ও বেথুন কলেজ তাঁরই স্থাপনায় গড়ে ওঠে।
১৯. উডের ডেসপ্যাচ কি? এতে কি বলা হয়?
উত্তর: বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি স্যার চার্লস উড ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষাবিষয়ক একটি নির্দেশনামা প্রকাশ করেন যা উডের ডেসপ্যাচ নামে পরিচিত ।
 এতে বলা হয় -- ১) পৃথক শিক্ষা দপ্তর গঠন। ২)কলকাতা , বোম্বাই ও মাদ্রাজে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা । ৩)শিক্ষক-শিক্ষন ব্যবস্থা চালু । ৪)উচ্চশিক্ষায় ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব বেশি। ৫)স্ত্রী শিক্ষার প্রসার প্রভৃতি।
২০. লালন ফকির কে ছিলেন?
উত্তর: উনিশ শতকের বাংলায় অন্যতম বাউল সাধক ছিলেন লালন ফকির। তিনি তার গানের মধ্য দিয়ে ধর্ম সমন্বয়ের প্রয়াস করেন।

                  বিভাগ ‘ঘ’
৪) সাত – আটটি বাক্যে নিম্ন লিখিত প্রশ্নের উত্তর দাও:
৪.১) বাংলার নবজাগরণে ও জাতীয়তাবাদের বিকাশে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান কী ছিল?
৪.২) সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে ব্রাহ্ম সমাজের অবদান কী ছিল?
৪.৩) নব্য বঙ্গ ইয়ং বেঙ্গল কাদের বলা হয়? উনিশ শতকের বাংলার ইতিহাসে নব্য বঙ্গ দের অবদান আলোচনা করো।
৪.৪) পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ডেভিড হেয়ার ও বেথুন সাহেবের ভূমিকা আলোচনা কর?


 তৃতীয় অধ্যায় - প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ  :

              ‘ক’ বিভাগ
১) সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করা:-
১.১) বাংলার নানাসাহেব বলা হতো –
উত্তর: (ক) রাম রতন রায় কে
১.২) ‘দাদন’ কথার অর্থ হল –
উত্তর: (ক) অগ্রিম অর্থ
১.৩) ফরাজী আন্দোলনের প্রবর্তক হলেন –
উত্তর: (ক) হাজী শরীয়ত উল্লাহ
১.৪) ‘ফরাজী’ কথার অর্থ হল –
উত্তর: (ক) ঈশ্বর নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্তব্য
১.৫) বাংলায় ওয়াহাবী অন্দোলনের নেতা ছিলেন –
(ক)  সৈয়দ আহম্মদ (খ) তিতুমীর (গ) হাজী শরিয়ত উল্লাহ (ঘ) আব্দুল ওয়াহাব
উত্তর: (খ) তিতুমীর
১.৬) নীল বিদ্রোহ শুরু হয় –
উত্তর: (খ) ১৮৫৯ সালে
১.৭) ‘ওয়াহাবি’ শব্দের অর্থ হল –উত্তর: (ক) নবজাগরণ
১.৮) ‘দার উল হরব’ কথার অর্থ হল –
উত্তর: (গ) শত্রুর দেশ
১.৯) বারাসাত বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন –
উত্তর: (ঘ) তিতুমীর
১.১০) ‘দিকু’ কথার অর্থ –
উত্তর: (গ) বহিরাগত

              বিভাগ ‘খ’
২) যেকোনো 16 টি প্রশ্নের উত্তর দেও (প্রতিটি উপ বিভাগ অন্তত একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে) :-
উপ বিভাগ: ২.১
** একটি বাক্যে উত্তর দাও:

২.১.১) নীল বিদ্রোহ কোন কোন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে?
উত্তর: নদিয়া, যশোর, খুলনা, মুর্শিদাবাদ।
২.১.২) ডিং খরচা কি?
উত্তর: রংপুর বিদ্রোহের সময় বিদ্রোহীরা বিদ্রোহের ব্যয় নির্বাহের জন্য চাঁদা ধার্য করা কে।
২.১.৩) বিরসা মুন্ডা কিভাবে মারা যান?
উত্তর: ১৯০০, সালে কলেরা রোগে।
২.১.৪) খুৎ কাঠি প্রথা কি?
উত্তর: মুন্ডা দের যৌথ মালিকানাকে।
উপবিভাগ ২.২
** ঠিক বা ভুল নির্ণয় কর:-
২.২.১) বিপ্লবের  একটি উদাহরণ হল ফরাজী বিপ্লব।     উত্তর : ঠিক
২.২.২) নীলকর সাহেবরা সাঁওতাল কৃষকদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের নীলচাষ করতে বাধ্য করতো।    উত্তর: ঠিক
২.২.৩) ভিল বিদ্রোহ পরিচালিত হয়েছিল ব্রিটিশ কোম্পানির বিরুদ্।     উত্তর: ঠিক
২.২.৪) তরিকা ই  মহম্মদিয়া  ছিল একটি মুসলিম পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলন।   উত্তর : ঠিক
উপ বিভাগ :২.৩
** ক স্তম্ভ সঙ্গে খ স্তম্ভ মেলাও:-
ক স্তম্ভ                                       খ স্তম্ভ
২.৩.১) তিতুমীর                             (ক) নীল বিদ্রোহ
২.৩.২) হাজী শরীয়ত উল্লাহ            (খ) পাগলপন্থি আন্দোলন
২.৩.৩) টিপু শাহ                           (গ) ফরাজি আন্দোলন
২.৩.৪) দিগম্বর ও বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস   (ঘ) বারাসাত বিদ্রোহ
উত্তর: ২.৩.১) তিতুমীর – (ঘ) বারাসাত বিদ্রোহ   ২.৩.২) হাজী শরীয়ত উল্লাহ – (গ) ফরাজি আন্দোলন
২.৩.৩) টিপু শাহ (খ) পাগলপন্থী আন্দোলন    ২.৩.৪) দিগম্বর ও বিষ্ণুচরন বিশ্বাস  – (ক) নীল বিদ্রোহ।
উপ বিভাগ: ২.৫
** নিম্ন লিখিত বিবৃতি গুলির সঙ্গে সঠিক ব্যাখ্যাটা নির্বাচন করো:
২.৫.১) বিবৃতি: বিপ্লব হলো একটি প্রতিবাদের পন্থা।
ব্যাখ্যা ১: বিপ্লব হলো সামরিক অভ্যুত্থানের একটি ধারা।
ব্যাখ্যা ২: বিপ্লব সাধারণতঃ দীর্ঘমেয়াদি হয়।
ব্যাখ্যা ৩: বিপ্লবের মাধ্যমে প্রচলিত ব্যবস্থার দ্রুত ও আমূল পরিবর্তন ঘটে।
উত্তর: ব্যাখ্যা ৩: মাধ্যমে প্রচলিত ব্যবস্থার দ্রুত ও আমূল পরিবর্তন ঘটে।
২.৫.২) বিবৃতি: সাঁওতাল বিদ্রোহ শেষ পর্যন্ত থেমে যায়।
ব্যাখ্যা ১: ব্রিটিশ সেনা নির্মম দমননীতির দ্বারা  বহু বিদ্রোহী কে হত্যা করে।
ব্যাখ্যা ২: বিদ্রোহীদের মধ্যে অনৈক্য চরম আকার ধারণ করে।
ব্যাখ্যা ৩: বিদ্রোহে সুযোগ্য নেতা কেউ ছিলনা।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: ব্রিটিশ সেনা নির্মম দমননীতির দ্বারা বহু বিদ্রোহীকে হত্যা ক।
২.৫.৩) বিবৃতি: বিরসা মুন্ডা নতুন ধর্মমত এর প্রচার করেন।
ব্যাখ্যা ১: তার উদ্দেশ্য ছিল ধর্মগুরু হিসেবে কাজ করে।
ব্যাখ্যা ২: তার উদ্দেশ্য ছিল ধর্মের বন্ধনে মুন্ডাদের ঐক্যবদ্ধ করে।
ব্যাখ্যা ৩: তার উদ্দেশ্য ছিল সর্বধর্ম সমন্বয় গড়ে তোলার চেষ্টা করা।
উত্তর: ব্যাখ্যা ২: তার উদ্দেশ্য ছিল ধর্মের বন্ধনে মুন্ডাদের ঐক্যবদ্ধ করে।
২.৫.৪) বিবৃতি: নীলকর সাহেবরা বে -এলাকা চাষে বেশি উৎসাহী ছিল।
ব্যাখ্যা ১: বে -এলাকা চাষে নীলকরদের নিজের জমির প্রয়োজন হতো না।
ব্যাখ্যা ২: বে-এলাকা চাষে কৃষকদের সুবিধা হত।
ব্যাখ্যা ৩: বে-এলাকা চাষে শান্তি বজায় থাকত।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: বে-এলাকা চাষে নীলকরদের নিজের জমির প্রয়োজন হতো না।
              বিভাগ ‘গ’
৩) দুটি অথবা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:-
1.ওয়াহাবি কথাটির অর্থ কী? ভারতে ওয়াহাবি আন্দোলনের সূচনা কে করেন?
উত্তর : ওয়াহাবি কথাটির অর্থ হল ইসলাম ধর্মের নবজাগরণ। দিল্লির প্রখ্যাত সন্ত শাহ ওয়ালিউল্লাহ সূত্রপাত করলেও রায়েবেলির সৈয়দ আহমেদ  ভারতে এই আন্দোলনের প্রকৃত প্রবর্তক ছিলেন।
2. তিতুমির এর জীবনীকারের নাম কী? তাঁর প্রধান সেনাপতি কে ছিলেন?
উত্তর : মিরনিসার আলি বা তিতুমির জীবনীকারের নাম হল পণ্ডিত বিহারীলাল সরকার। তিতুমিরের প্রধান সেনাপতির নাম তার নিজেরই ভাগ্নে গোলাম  মাসুম।
3. ফরাজি কথাটির অর্থ কী? এই আন্দোলনের সূচনা কে করেন?
উত্তর : ফরাজি শব্দটি এসেছে ‘ফরাজ’ শব্দ থেকে। যার অর্থ হল ইসলাম নির্দেশিত কর্তব্য। অর্থাৎ ইসলামের পবিত্র আদর্শে বিশ্বাস। বাংলার ফরিদপুরের হাজি শরিয়ৎ উল্লাহ ফরাজি আন্দোলনের সূচনা করেন।
4. কোন্ কোন অঞ্চল নিয়ে জঙ্গলমহল অল গঠিত? অথবা, জঙ্গল মহল বলতে কী বোঝো ?
উত্তর : মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও ধলভূম (বর্তমানে ঘাটশিলা) অঞ্চল নিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলার ঘন জঙ্গল আচ্ছন্ন বৃহৎ অঞ্চলকে বলা হয় ‘জঙ্গল মহল।
5. চুয়াড় বিদ্রোহ কখন, কোথায় ও কাদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল?
উত্তর : ১৭৬৭-৬৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিন দশক ধরে মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও ধলভূম (বর্তমানে ঘাটশিলা) জুড়ে চুয়াড় বিদ্রোহ হয়। ঘড়াই খয়রা মাঝি ও চুয়াড় প্রভৃতি আদিবাসীরা এই বিদ্রোহ করেছিল।
6. কোল বিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণ কী ছিল?
উত্তর : কোল বিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণ প্রসঙ্গে ড. জগদীশচন্দ্র ঝ তার ‘দ্য কোল রিবেলিয়ন’ গ্রন্থে বলেছেন—(i) সংগঠিত নেতৃত্বের অভাব। (ii) শিক্ষিত মানুষের অসহযােগিতা। (iii) আলিক সীমাবদ্ধতা। (iv) ইংরেজদের নির্মম অত্যাচার এই বিদ্রোহকে ব্যর্থভাবে অনিবার্য করে তুলেছিল।
7. মুণ্ডা বিদ্রোহ কবে, কার নেতৃত্বে সংগঠিত হয়? অথবা, মুণ্ডা বিদ্রোহ কয়টি পর্বে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর : মুণ্ডা বিদ্রোহ তিনটি পর্বে বিভক্ত। যেমন—(i) ১৮২০-১৮৩১ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ, যার নেতৃত্বে ছিলেন খুণ্ডকাটিদারগণ। (ii) ১৮৬০-১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ, যার নেতৃত্বে ছিলেন সর্দারগণ এবং (ii) ১৮৯০-১৯০০ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ। যার নেতা ছিলেন বিরসা মুণ্ডা।।
৪. ‘খুৎকাটি’ বা ‘খুন্তকাটি’ প্রথা কী?
উত্তর : মুণ্ডারা নিজেদের জমিতে যৌথ মালিকানার ভিত্তিতে ‘খুন্তকাটি’ প্রথায় চাষ করত। ‘খুন্তকাটি’ শব্দটির অর্থ হল—জনগোষ্ঠীর যৌথ মালিকানা। খুৎকাটি’ প্রথায় চাষ করা জমিকে বলা হত ‘খুন্তকাটি।
9. ‘কেনারাম’ ও ‘বেচারাম’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : দোকানদার যখন সাঁওতালদের কাছ থেকে ধান চাল কিনত তখন সাঁওতালদের ঠকানোর জন্য ভুয়ো বাটখারা ব্যবহার করত অর্থাৎ বেশি ওজনের বাটখারা ব্যবহার করত তার নাম হল ‘কেনারাম’ আবার দোকানদার যখন সাঁওতালদের মাল বিক্রয় করত তখনও ভুয়ো বাটখারা ব্যবহার করত। অর্থাৎ কম ওজনের বাটখারা ব্যবহার করত তার নাম হল ‘বেচারাম’।
10. দুদুমিঞা কে ছিলেন? তাঁর মতবাদ কী?
উত্তর : দুদুমিঞার আসল নাম হল মহম্মদ মসিন বা মহম্মদ মহসিন। তিনি ছিলেন ভারতে ফরাজি আন্দোলনের প্রবর্তক হাজি শরিয়ৎ উল্লাহ এর পুত্র ও ফরাজি আন্দোলনের জনপ্রিয় নেতা।
দুদুমিঞা ফরিদপুর জেলার গ্রামে গ্রামে প্রচার করেন যে সব মানুষই সমান। আল্লার সৃষ্টি এই পৃথিবীতে কর ধার্য করার অধিকার কারও নেই। সুতরাং রায়তদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করার অধিকার জমিদারদের নেই। তিনি শোষণমুক্ত স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।

                 বিভাগ ‘ঘ’
৪) সাত আটটি বাক্যে যে কোনো ছটি প্রশ্নের উত্তর দাওঃ
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-৪]

1. সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ সম্পর্কে লেখো।
উত্তর :ভূমিকা :বাংলাদেশে ও বিহারে ১৭৬৩-১৮০০ খ্রি. পর্যন্ত মূলত ‘গিরি’সম্প্রদায়ভুক্ত সন্ন্যাসী ও ‘মাদারী সম্প্রদায়ভুক্ত ফকিরদের নেতৃত্বে যে কৃষক বিদ্রোহ শুরু হয় তা সন্ন্যাসী বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
     সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহের কারণ :
     ১. করের বোঝা : করের বোঝা অষ্টশতকের ব্রিটিশরা ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা প্রচলিত করলে করের বোঝার চাপে কৃষিজীবী ও সন্ন্যাসী ফকিরেরা দুর্বল হয়ে পড়ে।
     ২. কোম্পানির কর্মচারীদের অত্যাচার : কোম্পানির কর্মচারীদের জোর করে বাণিজ্যে যুক্ত কিছু সম্প্রদায়ের লোকদের কাছ থেকে রেশনজাত দ্রব্য কেড়ে নিতে শুরু করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়।
     ৩. তীর্থ কর : সন্ন্যাসীদের অনেকেই রীতি নীতি মেনেই তীর্থ করতে যেত বা ভ্রমণে যে তাদের তীর্থযাত্রার ওপর কর আরোপ করেছিল।
  বিদ্রোহের প্রসার : ১৭৬৩ খ্রি. এই বিদ্রোহ সূচনা হয় এবং তা দাবানল-এর মতো ছড়িয়ে পরে, মালদা, রংপুর, দিনাজপুর, ফরিদপুর, কোচবিহার বিভিন্ন জেলায় এবং এই বিদ্রোহকে সমর্থন করেন—ভবানী পাঠক, দেবী চৌধুরানি প্রমুখ।
 বিদ্রোহের প্রকৃতি : সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহের মূল অংশ গ্রহণকারী কৃষক হলেও মোগল সেনাবাহিনী থেকে কর্মচ্যুত সেনারা যারা কৃষকদের ওপর নির্ভর করে জীবিকা চালাতেন তারাও এই বিদ্রোহে যোগ দেন এবং বিভিন্ন ফকির এই বিদ্রোহে যোগ দেয়। প্রকৃতিগত বিচারে সন্ন্যাসী বিদ্রোহ ছিল একটি ব্রিটিশবিরোধী কৃষক সংগ্রাম।
   ব্যর্থতার কারণ : সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ শেষ পর্যন্ত তার লক্ষে পৌঁছাতে ব্যর্থ। হয়—কারণ :
 ১. নেতৃত্বের দুর্বলতা : সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহের নেতা ভবানী পাঠক ও মজনু শাহের মৃত্যুর পর এই বিদ্রোহ দুর্বল হয়ে পড়ে। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়।
 ২. উপযুক্ত সংগঠনের অভাব : সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ ছিল উপযুক্ত সংগঠনের অভাব।       
৩. উন্নত অস্ত্র ও উপসংহার : সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ ছিল পরবর্তী সময়ে বহু কৃষক আন্দোলনের পথপ্রদর্শক। এই সন্ন্যাসী বিদ্রোহের পটভূমিকায় সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র তার শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘আনন্দমঠ’ রচনা করেন।
2. কোল বিদ্রোহের কারণ আলোচনা করো।
অথবা, টীকা লেখো : কোল বিদ্রোহ।
উত্তর : ভূমিকা : ঔপনিবেশিক আমলে সংঘটিত উপজাতি বিদ্রোহগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল কোল বিদ্রোহ। এরা বিহারের ছোটোনাগপুর অঞ্চলে বসবাস করত। এরা নিজস্ব আইনকানুন দ্বারা চালিত হত।
 কারণ : কোল বিদ্রোহের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হল—
     (i) রাজস্ব নির্ধারণ :ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছোটোনাগপুরের শাসনভার ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে গ্রহণ করে রাজস্ব আদায়ের জন্য মহাজনদের ইজরা দেওয়া হলে তারা উচ্চহারে রাজস্ব নির্ধারণ করে।
     (ii) আফিম চাষ : দিকুরা বলপ্রয়োগ করে এই উপজাতিদের দিয়ে আফিম চাষ করাত।
     (ii) অধিকার হরণ : কোলদের নিজস্ব আইনকানুন ছিল। ব্রিটিশ সরকারের নতুন অরণ্য আইনের আওতায় কোলদের নিয়ে আসা হলে তারা ক্ষুব্ধ হয়।
     (iv) নির্মম অত্যাচার : দিকু অর্থাৎ বহিরাগত মহাজন। তারা কর আদায় করতে গিয়ে কোলদের ওপর নির্মম অত্যাচার চালায় ফলে কোলেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
 উপসংহার : ১৮৩১-৩২ খ্রিঃ সংঘটিত কোল বিদ্রোহে বুদ্ধ ভগত, জোয়া ভগত, সুই মুণ্ডা প্রমুখ নেতৃত্ব দেন। ধীরে ধীরে এই বিদ্রোহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
3. বাংলার ফরাজি আন্দোলন সম্পর্কে যা জানো লেখো।
উত্তর : ভূমিকা : ইসলামের শুদ্ধিকরণের উদ্দেশ্য নিয়ে ফরাজি আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটেছিল। এই আন্দোলনের ফলে পরবর্তীকালে নতুন বৈশিষ্ট্যর সমাগম ঘটেছিল।
     (i) সূত্রপাত : ফরাজি আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিলেন হাজি শরিয়ৎ উল্লাহ এই উদ্দেশ্যে তিনি ফরাজি নামে একটি আলাদা সম্প্রদায়ের সূত্রপাত করেন।
     (ii) বিশ্বাস : ভারতবর্ষকে বিধর্মীদের দেশ বা ‘দার-উল-হাবার’ বলে মনে করতেন হাজি শরিয়ৎ উল্লাহ। তিনি তাঁর অনুগামীদের কোরান নির্দিষ্ট মুসলমানের আদর্শ ও কর্তব্যগুলি বিশ্বাসের সাথে পালনের নির্দেশ দেন।
     (iii) ইসলামের শুদ্ধিকরণ : চরিত্রগত দিক থেকে এটি ছিল ধর্মীয় আন্দোলন। কারণ ইসলামের শুদ্ধিকরণ ছিল এই আন্দোলনের মুখ্য উদ্দেশ্য।
 (iv) আন্দোলনের অবসান : দুদুমিঞার মৃত্যুর পর তার পুত্র নোরামিঞার নেতৃত্বে আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তার ধর্মীয় চরিত্র প্রবলভাবে প্রকট হয়ে ওঠে।
 উপসংহার : ফরাজি আন্দোলনের মধ্যে যেমন চরিত্রগত ভাবে কৃষক আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়, তেমনি ধর্মীয় নানা বৈশিষ্ট্যও এই আন্দোলনের মধ্যে রয়ে গেছে, তাকে অস্বীকার করবার উপায় নেই।
          
     বিভাগ ‘ঙ’
৫) পনেরো- ষোলটি  বাক্যে যেকোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাওঃ

৫.১) নীল বিদ্রোহ সম্পর্কে একটি নিবন্ধ রচনা কর।
অথবা , নীল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো।
অথবা , নীল বিদ্রোহের সম্পর্কে যা জানো লেখো।
উত্তর : ভূমিকা : ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে নীলচাষিদের ওপর নীলকর সাহেবদের অমানুষিক অত্যাচার ও নির্মম শোষণের বিরুদ্ধে নীলচাষিদের সংঘবদ্ধ আন্দোলনকে নীল বিদ্রোহ বলে। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে এই বিদ্রোহের সূচনা হয়।
   নীল বিদ্রোহের কারণ : নীল বিদ্রোহটি ছিল বিভিন্ন কারণের সম্মিলিত ফল। এই বিদ্রোহের কারণগুলি হল-
 ১. নীলকর সাহেবদের অত্যাচার : নীল বিদ্রোহের অন্যতম কারণ ছিল কোনো চাষির ইচ্ছার বিরুদ্ধে নীলচাষ করানো। নীলকরদের অত্যাচার, লুণ্ঠন, শোষণ ছিল এই বিদ্রোহের অন্যতম কারণ।
     ২. উৎকৃষ্ট জমিতে নীলচাষ করানো : নীলকর সাহেবেরা সব সময় কৃষককে উৎকৃষ্ট জমিতে নীলচাষ করিয়ে নিত। কোনো কৃষকই তাদের খাদ্যশস্য ছেড়ে ওই উৎকৃষ্ট জমিতে নীল চাষে আগ্রহী ছিল না।
     ৩. দাদন প্রথা : ‘দাদন’ শব্দের অর্থ হল অগ্রিম। নীলকর সাহেবেরা নীল চাষের জন্য বিঘা প্রতি দু টাকা করে দাদন বা অগ্রিম দেওয়া হত। আর একবার দাদন নিলে শোধ হত না।
     ৪. পঞম আইন : ১৮৩০ খ্রি. লর্ড বেন্টিঙ্ক পম আইন পাশ করেন। এই আইনে বলা হয় দাদন নিয়ে চাষ না করলে তা বে-আইনি বলে গণ্য হবে এবং অপরাধীর জেল হবে ।
 নীল বিদ্রোহের ফলাফল :
     ১. নীল কমিশন গঠন : নীল বিদ্রোহের ব্যাপকতা লক্ষ করে সরকার বাধ্য হয়ে ১৮৬০ খ্রি. নীল কমিশন গঠন করেন। এই কমিশন নীলচাষকে নীলচাষিদের ইচ্ছাধীন বলে ঘোষণা করেন।
     ২. কৃষকদের সাফল্য : নীল বিদ্রোহের ফলে কৃষকরা নীল চাষ থেকে রেহাই পায়। নীলকর সাহেবদের বিরুদ্ধে কৃষকদের এই সাফল্য বাংলার ইতিহাসে বিশেষ। তাৎপর্যপূর্ণ।
     ৩, রাজনৈতিক আন্দোলন : অমৃতবাজার পত্রিকায় শিশির কুমার ঘোষ লেখেন যে, নীল বিদ্রোহই সর্বপ্রথম ভারতবাসীকে সংঘবদ্ধ রাজনৈতিক আন্দোলন প্রয়োজনীয়তা শিখিয়েছিল এবং এই বিদ্রোহের ফলে লোকেদের রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।
     ৪. মহাজন কর্তৃক প্রতিষ্ঠা : Blaim Kling তার Blue Mutiny গ্রন্থে দেখান যে নীলকর সাহেবদের পতনের ফলে নিম্নবঙ্গোর কর্তৃত্ব সুদখোর মহাজনদের হাতে চলে যায়।
     ৫. শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির যোগান : নীল বিদ্রোহকালে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, দীনবন্ধু মিত্র, শিশির কুমার ঘোষ সহ বহু শিক্ষিত ব্যক্তিত্ব তাদের লেখনী মাধ্যমে জনমত গঠনে এগিয়ে এসেছিলেন। এর ফলে কৃষকদের সঙ্গে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির যোগসূত্র গড়ে ওঠে।
     ৬. বাঙালি জাতির মনোবল বৃদ্ধি : নীল বিদ্রোহ ছিল বাঙালির সফল সংঘবদ্ধ আন্দোলন। এই আন্দোলনে জয় লাভ করার ফলে বাঙালি জাতির মনোবল বৃদ্ধি পেয়েছিল।
   মূল্যায়ন : পরিশেষে বলা যায়, নীল বিদ্রোহ বাঙালি সমাজে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। বাঙালি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় নীলচাষিদের বিদ্রোহকে সমর্থন করেছিল এবং দিগম্বর বিশ্বাস, বিশ্বনাথ সর্দার, মহেশ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ নেতৃত্ববৃন্দের নীলকর সাহেবের বিরুদ্ধে এক বিস্ফোরক প্রতিবাদই ছিল নীলবিদ্রোহ।

চতুর্থ অধ্যায় - 
সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা

              বিভাগ ‘ক’
(১) সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
(১.১) বিখ্যাত ঔপনিবেশিক ব্যঙ্গচিত্র শিল্পী ছিলেন কোন্‌ চিত্রকার? –
উত্তরঃ (ক) গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(১.২) সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম শহিদ ছিলেন –
উত্তরঃ (ঘ) মঙ্গল পান্ডে
(১.৩) কাকে ‘ বাংলার মুকুটহীন রাজা ‘ বলা হয় –
উত্তরঃ (গ) সুরেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়
(১.৪) লক্ষ্মীবাঈ সিপাহি বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন –
উত্তরঃ (গ) ঝাঁসিতে
(১.৫) ‘বন্দেমাতরম্‌’ সংগীতটি নেওয়া হয়েছে –
উত্তরঃ (ক) আনন্দমঠ উপন্যাস থেকে
(১.৬) ভারতের প্রথম রাজনৈতিক সংগঠন ছিল –
উত্তরঃ (গ) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা
(১.৭) জমিদার সভার সভাপতি ছিলেন –
উত্তরঃ (ঘ) রাধাকান্ত দেব
(১.৮) ‘বর্তমান ভারত’ রচনা করেন –
উত্তরঃ (ঘ) স্বামী বিবেকানন্দ
(১.৯) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা একটি উল্লেখযোগ্য চিত্র হল –
উত্তরঃ (গ) ভারত মাতা
(১.১০) ‘রাষ্ট্রগুরু’ বলা হয় –
উত্তরঃ (গ) সুরেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়
               
     বিভাগ ‘খ’
২) যেকোনো 16 টি প্রশ্নের উত্তর দাও:
উপ বিভাগ ২.১
** একটি বাক্যে উত্তর দাও:

২.১.১) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কি ছিল?
উত্তর: ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে এনফিল্ড রাইফেলের টোটার প্রচলন।
২.১.২) হিন্দুমেলার অপর নাম কি?
উত্তর: চৈত্র মেলা
২.১.৩) কোন সিপাহি প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা করেন?
উত্তর: মঙ্গল পান্ডে
২.১.৪) স্বামী বিবেকানন্দের লেখা দুটি গ্রন্থের নাম লেখ?
উত্তর: বর্তমান ভারত ও পরিব্রাজক
উপ বিভাগ: ২.২
** ঠিক বা ভুল নির্ণয় কর:
২.২.১) বিদ্রোহী সেপাইরা দিল্লি দখল করে করে নেয় এবং মোগল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ কে ভারতের সম্রাট বলে ঘোষণা করে।        উত্তর: ঠিক
২.২.২) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত বাঙালি সমাজের একটি অংশ ব্রিটিশ শাসনকে ভারতের পক্ষে কল্যাণকর বলে মনে করত।        উত্তর: ঠিক
২.২.১) ভারত সভার নেতৃবৃন্দের উদ্যোগ কলকাতায় ১৮৮৩ সালে সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন নামে মহাসভা অনুষ্ঠিত হয়।       উত্তর: ঠিক
২.২.৪) বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ বলেছেন বিবেকানন্দই আমাদের জাতীয় জীবনের গঠনকর্তা।
উত্তর: ঠিক
উপ বিভাগ ২.৩
** ক স্তম্ভের সঙ্গে খ স্তম্ভ মিলাও:
ক স্তম্ভ                    খ স্তম্ভ
২.৩.১) লর্ড ক্যানিং         ক) প্রথম ভাইসরয়
২.৩.২) লর্ড লিটন           খ) ইলবার্ট বিল
২.৩.৩) লর্ড রিপন            গ) ভারত শাসন আইন
২.৩.৪) ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ঘ) অস্ত্র আইন
উত্তর: ২.৩.১) লর্ড ক্যানিং- ক) প্রথম ভাইসরয় ২.৩.২) লর্ড লিটন – ঘ) অস্ত্র আইন
 ২.৩.৩) লর্ড রিপন – খ) ইলবার্ট বিল ২.৩.৪) ব্রিটিশ পার্লামেন্ট – গ) ভারত শাসন আইন
উপ বিভাগ: ২.৫
** নিম্ন লিখিত বিবৃতি গুলির সঙ্গে সঠিক ব্যাখ্যা টি নির্বাচন কর:
২.৫.১) বিবৃতি: ১৮৫৭ এর বিদ্রোহী বিদ্রোহীরা দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ কে ভারতের সম্রাট বলে ঘোষণা করে।
ব্যাখ্যা ১: বিদ্রোহীরা ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা দিতে চেয়েছিলেন।
ব্যাখ্যা ২: দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ মোগল সম্রাট হয়ে ১৮৫৭ এর সিপাহী বিদ্রোহ যোগ দিতে রাজি হয়েছিলেন।
ব্যাখ্যা ৩: দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ বিদ্রোহী সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারেন।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: বিদ্রোহীরা ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা দিতে চেয়েছিলেন।
২.৫.২) বিবৃতি: উনিশ শতককে সভা সমিতির যুগ বলা হয়।
ব্যাখ্যা ১: উনিশ শতকের ভারতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা সমিতি গড়ে ওঠে।
ব্যাখ্যা ২: ড: অনিল উনিশ শতককে সভা সমিতির যুগ বলে ঘোষণা করেন।
ব্যাখ্যা ৩: উনিশ শতকের সভা-সমিতি গুলির মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ছিল জাতীয় কংগ্রেস।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: উনিশ শতকের ভারতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা সমিতি গড়ে ওঠে।
২.৫.৩) বিবৃতি: আধুনিক ভারতের ভারত সভার অবদান অসামান্য।
ব্যাখ্যা ১: ভারত সভা নারী শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটায়।
ব্যাখ্যা ২: ভারত সভা জমিদারদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করে।
ব্যাখ্যা ৩: ভারত সভা ভারতীয়দের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার প্রসার ঘটানোর উদ্যোগ নেয়।
উত্তর: ব্যাখ্যা ৩: ভারত সভা ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার প্রসার ঘটানোর উদ্যোগ নেয়।
২.৫.৪) বিবৃতি: অবনীন্দ্রনাথ তাঁর আঁকা ভারতমাতা চরিত্রে অস্ত্র রাখেননি।
ব্যাখ্যা ১: হিন্দু দেবী লক্ষ্মীর হাতে অস্ত্র ছিল না।
ব্যাখ্যা ২: অবনীন্দ্রনাথ স্বদেশপ্রেমের ভাবনা থেকে সন্ত্রাসবাদকে দূরে রাখতে চেয়েছিলেন।
ব্যাখ্যা ৩: ভারতমাতা চিত্রটির ছিল স্বদেশ প্রেমের প্রতীক।
উত্তর: ব্যাখ্যা ২: অবনীন্দ্রনাথ স্বদেশপ্রেমের ভাবনা থেকে সন্ত্রাসবাদকে দূরে রাখতে চেয়েছিলেন।
        
   বিভাগ ‘গ’
৩) দুটি অথবা তিনটি বাক্য নিম্ন লিখিত প্রশ্ন গুলির উত্তর দাও:

1. মহারানির ঘোষণাপত্র কী?
উত্তর : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মহাবিদ্রোহের পর মহারানি ভিক্টোরিয়া ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে ভারতের আর নিজ দায়িত্ব নেওয়ার জন্য ভাইসরয় লর্ড ক্যানিং-এর কাছে এলাহাবাদে অনুষ্ঠিত এক দরবারে এক ঘোষণাপত্র পেশ করেন (১ সেপ্টেম্বর, ১৮৫৮ খ্রি.) যা মহারানির ঘোষণাপত্র নামে পরিচিত।
2. ঝাঁসির রানি কেন বিখ্যাত?
উত্তর : ঝাঁসি রাজ্য কোম্পানি অধিগ্রহণ করে প্রতিবাদে ঝাসির রানি লক্ষ্মীবাঈ বিদ্রোহের (সিপাহি) নেত্রী হিসাবে ঝাপিয়ে পড়েন এবং শেষপর্যন্ত যুদ্ধে ১৭ জুন ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
3. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের সিপাহি বিদ্রোহকে কেন জাতীয় বিদ্রোহ বলা হয় তার যুক্তি লেখো।
উত্তর : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের সিপাহি বিদ্রোহ স্পষ্ট উদ্দেশ্য ও সর্বভারতীয় চরিত্র না থাকলেও ভারতের এক বৃহদাংশের নানা শ্রেণির জনগণ ও সিপাহিরা একযোগে লড়ে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিল। এইজন্যই ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলা যুক্তিসংগত।
4. Vernacular Press Act বা ভার্নাকুলার অ্যাক্ট বা মাতৃভাষা আইন কবে প্রবর্তন হয়? এর উদ্দেশ্য কী?
উত্তর : ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে Vernacular Press Act বা মাতৃভাষা আইন প্রবর্তিত হয়।। এর উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় দেশীয় সেনা প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলির কণ্ঠরোধ করা।
5. ইউরোপীয়রা কেন ইলবার্ট বিল মানতে পারেননি?
উত্তর : লর্ড রিপন এই ইলবার্ট বিল প্রবর্তন করেন। ইউরোপীয়রা এই বিল মানতে পারেনি কারণ ভারতীয়দের কাছে বিচারপ্রার্থী হিসাবে তাদের আত্মাভিমানে আঘাত লাগত।
6. কে, কোথায় এবং কবে সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন আহ্বান করেন?
উত্তর : ভারতীয় জনগণকে সুগঠিত ও জোরদার করার উদ্দেশ্যে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় জাতীয় সম্মেলনের আহ্বান করেন।
7. আনন্দমঠ কে রচনা করেন? এই গ্রন্থের মূল উদ্দেশ্য কী?
উত্তর : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আনন্দমঠ রচনা করেন। এই গ্রন্থের মূল উদ্দেশ্য হল—স্বদেশ প্রেমই হল শ্রেষ্ঠ ধর্ম।
৪. ভারতসভা কার উদ্যোগে কবে গঠিত হয়?
উত্তর : সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রি প্রমুখের উদ্যোগে ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই ভারতসভা গঠিত হয়।
10. গোরা উপন্যাসের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন্ বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন?
উত্তর : গোরা উপন্যাসটির মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাতীয়তাবাদ ও রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন তুলে ধরেছেন।
 বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-4]
1.‘আনন্দমঠ উপন্যাসটি কীভাবে জাতীয়তবাদী চেতনা বিস্তারে সহায়তা করেছিল?
উত্তর : ভূমিকা : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘আনন্দমঠ উপন্যাসের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদের প্রচার করেছিলেন। ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত তাঁর এই উপন্যাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল স্বদেশপ্রীতি।
 জাতীয়তাবাদী চেতনায় আনন্দমঠ : 
(i) স্বদেশ প্রেম : বঙ্কিমচন্দ্র রচিত ‘আনন্দমঠ' উপন্যাস জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষের সঙ্গে সঙ্গে দেশবাসীর মনে স্বদেশীকতা ও সশস্ত্র অভ্যুত্থানের ধারণা। সারিত করেছিল।
 (i) বন্দেমাতরম সংগীত : ‘আনন্দমঠ উপন্যাসে জন্মভূমিকে মাতৃরূপে কল্পনা করে ‘বন্দেমাতরম'সংগীতটি (১৮৭৫) ছিল পরাধীন ভারতের জাতীয় সংগীত, বিপ্লবীদের
  (ii) সন্তান দল : বাংলায় মুসলিম রাজশক্তির পতন ও ইংরেজ রাজত্বের প্রতিষ্ঠা এক নৈরাজ্যের সৃষ্টি করে। এই সংকটকালে ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশমাতার মুক্তির জন্য সন্তান দলের আবির্ভাব ঘটে।
 (iv) আনন্দমঠের মূল বিষয় :‘আনন্দমঠ উপন্যাসে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য একদল আত্মত্যাগী সন্ন্যাসীর কার্যাবলির বিবরণ আছে।
 উপসংহার : বাঙালির জাতীয়তা গঠন ও দেশের যুব সম্প্রদায়কে স্বদেশভক্তি, ত্যাগ ও সেবাধর্মে উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে রচিত ‘আনন্দমঠ’ এর অবদান বাঙালি জাতীয়জীবন গঠনে ওতোপ্রতভাবে জড়িয়ে আছে।
2. রবীন্দ্রনাথের ‘গোরা' উপন্যাস সম্পর্কে যা জানো লেখো। গোরা’ চরিত্রটি কীভাবে মানবতার জয়গান করেছিল?
 উত্তর : ভূমিকা : বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন এর অন্যতম নেতা ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সে আন্দোলনের লক্ষ ছিল বাঙালি ও ভারতীয় জীবন ধারার সামগ্রিকভাবে উন্নয়ন করা। শুধুমাত্র বিদেশি শাসকশক্তির বিরুদ্ধে নিস্ফলন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
 রচনা ও প্রকাশ কাল : ‘গোরা' উপন্যাসটি লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।‘গোরা' উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে।
গোরা উপন্যাসের সারমর্ম : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে সিপাহি বিদ্রোহের সময় এক আইরিশ যুদ্ধে মারা যান। তার আসন্ন প্রসবা স্ত্রী ব্ৰণ কৃয়দয়ালের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি এক পুত্র সন্তান প্রসব করেই মারা যান। এই ছেলেটির নাম হয় ‘গোরা'।
 জাতীয়তাবোধ : বাংলাদেশ তথা ভারতবর্ষের মানসলোকের প্রতীকি চরিত্র হল। গোরা। জাতীয়তাবোধের বিকাশে বহু উপন্যাসের মধ্যে গোরা উপন্যাসটি বিশিষ্টতার দাবি রাখে। বৈশিষ্ট্যগুলি হল।
 বিরোধ সমন্বয় : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর এই উপন্যাসে সমকালীন যুগজীবনের প্রতিচ্ছবি এঁকেছেন। এক দ্বন্দ্ব ও তা থেকে উত্তীর্ণ এক সামগ্রিক পরিমণ্ডল এখানে। চিত্রিত হয়েছে। জাতিভেদ, বর্ণবৈষম্য, অভাব ও দারিদ্র্যের সমাধানের ইঙ্গিতও রবীন্দ্রনাথ দিয়েছেন।
 মধ্যবিত্ত মানসিকতা : এই উপন্যাসে শিক্ষিত বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজের মানসিকতা ফুটে উঠেছে। বাঙালির আত্মপ্রতিষ্ঠা, অনুসন্ধানী মনোভাব, কৌতূহল, মানবতা ফুটে উঠেছে।
 সংকীর্ণতা : আইরিশ যুবক গোরা হিন্দু পরিবারে লালিত-পালিত হয়ে নিজের বিদেশি সত্তা ভুলে গিয়ে বাঙালি হয়ে যায়। সমাজের অন্দরে বাসা বাঁধা এই সংকীর্ণতা গোরা উপন্যাসে ফুটে উঠেছে।
 উপসংহার : অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গোরা উপন্যাসের মধ্য দিয়ে একদিকে ছড়িয়ে পড়েছে অসম্প্রদায়িকতার বাণী এবং অন্যদিকে জাতীয়তাবাদের মূল প্রকৃতি।
3. ভারতসভা প্রতিষ্ঠাতার উদ্দেশ্যগুলি লেখো অথবা, ভারতসভার লক্ষ্য কী ছিল?
উত্তর : ভূমিকা : ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই কলকাতায় অনুষ্ঠিত এক সভা থেকে ভারতসভা বা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন জন্মলাভ করে। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিষ্ঠিত ভারতসভা, যা প্রাক্কংগ্রেস যুগে ভারতীয় জাতীয় আন্দোলনকে পরিচালিত করেছিল।
 উদ্দেশ্য : কলকাতার অ্যালবার্ট হলে প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের উদ্দেশ্যগুলি ছিল—
প্রথমত, সমগ্র ভারতে শক্তিশালী জনমত জাগ্রত করা।
দ্বিতীয়ত, হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃভাব গড়ে তােলা।
তৃতীয়ত, ভারতের বিভিন্ন জাতি ও ধর্মের লোককে রাজনৈতিক স্বার্থে সংঘবদ্ধ করা।
 কার্যাবলি : (i) কৃষকদের জন্য ভারতসভা জমিদারি অত্যাচার, ১৮৫৯-এর রেন্ট। অ্যাক্ট ইত্যাদির বিরােধিতা করে। (i) সিভিল সার্ভিসে বসার বয়স ভারতীয়দের জন্য কমিয়ে দেওয়া হলে ভারতসভা প্রতিবাদ জানায়। (ii) ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে ভারতসভার আন্দোলন ছিল প্রশংসার যোগ্য।
 গুরুত্ব : এই সভার গুরুত্বগুলি ছিল— (i) ভারতবর্ষে ব্রিটিশ জনমত গড়ে ওঠে। (i) দেশে জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটতে থাকে। (ii) একটি সর্বভারতীয় প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়।
 উপসংহার :ভারতসভা তৎকালীন ব্রিটিশের অন্যাস নিয়মকানুন, আইনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। বড়োলাট লর্ড রিপনের প্রতিক্রিয়াশীল আইনের বিরুদ্ধেও ভারতসভা বিপুল জনমত গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর : (প্রতিটি প্রশ্নের মান-৪]
1. মহাবিদ্রোহের (১৮৫৭) চরিত্র বিশ্লেষন করো।
2. ভারতে জাতীয়তাবাদের উন্মেষের কারণ বিশ্লেষণ করো। 
অথবা, উনিশ শতকে ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয় চেতনার উন্মেষের কারণগুলি আলোচনা করো।
উত্তর : ভূমিকা : জাতীয় চেতনা থেকেই জাতীয়তাবাদের জন্ম হয়। ঔপনিবেশিক শাসনের গোড়ার দিকে ভারতে কোনো জাতীয়তাবাদী চেতনা ছিল না। বিদেশি শাসনের ফলশ্রুতি হিসেবেই আধুনিক জাতীয়তাবাদের বিকাশ শুরু হয়।
 ইউরোপীয় প্রভাব :
(ক) আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ (১৭৭৪)।
(খ) জাপানের সাফল্য ও অগ্রগতির ভারতীয়দের স্বাধীন চিন্তা শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
(গ) ফরাসি বিপ্লব (১৭৮৯)।
(ঘ) রাশিয়ার নিইলিস্ট আন্দোলনও বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
 (1) ব্রিটিশ অপশাসন : ব্রিটিশ অপশাসনের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের সর্বস্তরের মানুষের মনে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছিল। এই অসন্তোষ থেকেই জাতীয় চেতনা জাগ্রত হতে থাকে।
 (2) জাতিগত বৈষম্য ; শাসক ইংরেজ ও শাসিত ভারতবাসীর মধ্যে জাতিগত বৈষম্য সামাজিক ব্যবধান সৃষ্টি করেছিল। ইংরেজরা ভারতীয়দের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত। তারা সিপাহি, দেশীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করত।
 (3) পাশ্চাত্য শিক্ষা : মিশনারি ও সরকারি উদ্যোগে ভারতবর্ষে পাশ্চাত্য শিক্ষা চালু হয়। ফলে ভারতবাসী ইউরোপীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত হয়। বিশেষ করে আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ, ফরাসি বিপ্লব, ইউরোপীয় রাষ্টদর্শন শিক্ষিত ভারতীয়দের মনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে।
(4) অতীত ঐতিহ্য : ইউরোপীয় পণ্ডিত উইলিয়াম জোনস, ম্যাক্সমুলার ও ভারতীয় পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, ভাণ্ডারকরের চেষ্টায় ভারতের সমৃদ্ধ অতীত ঐতিহ্য প্রচারিত হয়।
 (5) সাহিত্য : পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাব এদেশের সাহিত্যের উপর পড়েছিল। উপন্যাস, কাব্য, নাটক, প্রবন্ধ দেশবাসীর কাছে আশা-আকাক্ষার সৃষ্টি করে। প্রতিবাদের মানসিকতা গড়ে তোলে।
 (6) পত্রপত্রিকা : সাহিত্যের মতো সংবাদপত্রও জাতীয়তাবাদের উন্মেষে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল। শ্রীরামপুর মিশনারিদের ‘দিগদর্শন’, ‘সমাচার দর্পণ, গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের ‘বেঙ্গল গেজেট’, রামমোহনের ‘সংবাদ কৌমুদী' কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সংবাদ প্রভাকর’ প্রভৃতি।
 (7) যোগাযোগ ব্যবস্থা : ইংরেজ সরকার নিজেদের স্বার্থে রেলপথ, সড়কপথ, টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিরাট উন্নতি ঘটে।
 (৪) দেশীয় শিল্পের অবক্ষয় : ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যিক অধিকার ইংল্যান্ডের শিল্পায়ন, অবাধ বাণিজ্য নীতি, সরকারের শুদ্ধনীতি দেশীয় শিল্পের অবক্ষয় ঘটায়।
 উপসংহার : উপরোক্ত কারণ ছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ একে অন্যকে চিনতে বুঝতে পারে। প্রাদেশিকতার সীমা ছাড়িয়ে ভারতবাসীর মধ্যে এক ঐক্য গড়ে ওঠে।


পঞ্চম আধ্যায় - বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগঃ বৈশিষ্ট্য পর্যালচনা

                বিভাগ ‘ক’
১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
১.১) বেঙ্গল কেমিক্যালের প্রতিষ্টতা ছিলেন –
উত্তরঃ (ক) প্রফুল্লচন্দ্র রায়
১.২) শ্রীরামপুরের ছাপাখানার প্রতিষ্টা করেন –
উত্তরঃ (ক) উইলিয়াম কেরি
১.৩) কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্টিত হয় –
উত্তরঃ (খ) ১৮৩৫ খ্রিঃ
১.৪) ছাপাখানার প্রথম বাঙালী ব্যবসায়ী ছিলেন –
উত্তরঃ (ক) গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য
১.৫) বিশ্বভারতীর প্রথম উপাচার্য ছিলেন –
উত্তরঃ (খ) রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১.৬) কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট ছিল –
(গ) অহিংস অসহযোগ আন্দোলন 
১.৭) ‘জাতীয় বিজ্ঞানচর্চার জনক’ বলে –
উত্তরঃ (খ) জগদীশচন্দ্র বসুকে
১.৮) বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্টা করেছিলেন –
উত্তরঃ (ক) জগদীশচন্দ্র বসু
১.৯) ‘গোলদিঘির গোলামখানা’ নামে পরিচিত ছিল –
উত্তরঃ (ঘ) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
১.১০) ‘জাতীয় শিক্ষা’ কথাটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন –
উত্তরঃ (ক) প্রসন্ন কুমার ঠাকুর
               বিভাগ ‘খ’
২। যে কোনো ষোলোটি প্রশ্নের উত্তর দাও ( প্রতিটি উপবিভাগ থেকে অন্ততঃ একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে)
উপবিভাগঃ ২.১
** একটি বাক্যে উত্তর দাওঃ
২.১.১) কত জন সদস্য নিয়ে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয়?
উত্তরঃ ৯২ জন
২.১.২) কলকাতায় কে প্রথম ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তরঃ জেমস অগাস্টাস হিকি
২.১.৩) ‘বর্ণপরিচয়’ গ্রন্থটির রচয়িতা কে ছিলেন?
উত্তরঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
২.১.৪) রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতকে কীরূপে পরিবেশে শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলেন?
উত্তরঃ প্রাকৃতিক পরিবেশে
উপ বিভাগ:২.২
** ঠিক বা  ভুল নির্ণয় কর :-
২.২.১) ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার পর মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি পায়।   উত্তর: ঠিক
২.২.২) বিদ্যাসাগর রচিত বর্ণপরিচয় তার জীবদ্দশাতেই মোট ১৫২ টি সংস্কার প্রকাশিত হয় এবং ৩৫ লক্ষেরও বেশি ছাপা বই পাঠকদের কাছে পৌঁছে যায়।      উত্তর: ঠিক
২.২.৩) বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু এবং  মেঘনাথ সাহা স্বাধীন ভারতের জাতীয় পরিকল্পনা কমিশন এ যুক্ত ছিলেন।      উত্তর: ঠিক
২.২.৪) কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।    উত্তর: ঠিক
উপরিভাগ: ২.৩
** ক স্তম্ভের সঙ্গে খ স্তম্ভ মিলাও:-
ক স্তম্ভ                                   খ স্তম্ভ
২.৩.১) ছাপাখানার জনক     (ক) পঞ্চানন কর্মকার
২.৩.২) প্রথম বাংলা             (খ) সুরেশ চন্দ্র মজুমদার
২.৩.৩) প্রথম উন্নত বাংলা    (গ) জোহানেস গুটেনবার্গ
২.৩.৪) লাইনো টাইপ           (ঘ) চার্লস উইলকিনস
উত্তর: ২.৩.১) ছাপাখানার জনক – (গ) জোহানেস গুটেনবার্গ         ২.৩.২) প্রথম বাংলা অক্ষরের টাইপ নির্মাতা –  (ঘ) চার্লস উইলকিনস        ২.৩.৩) প্রথম উন্নত বাংলা অক্ষরের টাইপ নির্মাতা – (ক) পঞ্চানন কর্মকার    ২.৩.৪) লাইনো টাইপ  – (খ) সুরেশ চন্দ্র মজুমদার
উপ বিভাগ: ২.৫
** নিম্ন লিখিত বিবৃতি গুলির সঙ্গে সঠিক ব্যাখ্যা টি নির্বাচন কর:-
২.৫.১) বিবৃতি: পঞ্চানন কর্মকার উন্নত মানের বাংলা হরফ তৈরি করতে সক্ষম হন।
ব্যাখ্যা ১: পঞ্চানন কর্মকার স্বর্ণ শিল্পী ছিলেন।
ব্যাখ্যা ২: পঞ্চানন কর্মকার হস্তরেখা বিশারদ ছিলেন।
ব্যাখ্যা ৩: পঞ্চানন কর্মকার মৃৎশিল্পী ছিলেন।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: পঞ্চানন কর্মকার স্বর্ণ শিল্পী  ছিলেন।
২.৫.২) বিবৃতি: ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
ব্যাখ্যা ১: এই সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিল কোলকাতায় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করা।
ব্যাখ্যা ২: এই সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিল স্কুল পাঠ্য বই ছাপিয়ে সুলভে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া।
ব্যাখ্যা ৩: এই সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষকদের কাছ থেকে বইপত্রের বিষয়ে পরামর্শ নেওয়া।
উত্তর: ব্যাখ্যা ২: এই সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিল স্কুল পাঠ্য বই ছাপিয়ে সুলভে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া।
২.৫.৩) বিবৃতি: বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু কলকাতায় বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।
ব্যাখ্যা ১: বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক গবেষণার কাজ করা।
ব্যাখ্যা ২: ব্রিটিশ সরকার জগদীশচন্দ্র বসুকে বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেন।
ব্যাখ্যা ৩: স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানের পাঠ দান করাই ছিল বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক গবেষণার কাজ করা।
২.৫.৪) বিবৃতি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
উত্তর: ব্যাখ্যা ৩: রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশ্য ছিল উচ্চশিক্ষায় মুক্ত চিন্তা ও সত্যানুসন্ধানের প্রসার ঘটানো।        
 বিভাগ ‘গ’
৩) দুটি অথবা তিনটি বাক্য নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
1.ওষুধ শিল্পের জনক কাকে বলা হয় ? তিনি কী প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : ওষুধ শিল্পের জনক বলা হয় বিখ্যাত রাসায়নবিদ আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। তিনি বেঙ্গল কেমিক্যাল এ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস প্রতিষ্ঠা করেন।
2. ভারতের বেকন কাকে বলা হয়? তাঁর লেখা দুটি গ্রন্থের নাম লেখো
উত্তর : তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদক অক্ষয়কুমার দত্তকে বলা হত ভারতের বেকন।। তার লেখা দুটি গ্রন্থের নাম—(১) বাহ্য বস্তুর সহিত মানব প্রকৃতির সম্বন্ধ (১৮৫২ খ্রিঃ) (২) পদার্থবিদ্যা (১৮৫৬ খ্রিঃ)।
3. উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী কে ছিলেন? অথবা স্মরণীয় কেন?
উত্তর : উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী প্রকৃত নাম হল কামদারঞ্জন রায়। তিনি ছিলেন একাধারে বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক, অঙ্কনশিল্পী, বেহালাবাদক, সুরকার, বাংলার U N Ray and Son বা ইউ, এন, রায় এন্ড সন্স ছাপাখানার প্রতিষ্ঠাপক হিসাবে স্মরণীয় ছিলেন।
4. কে কবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন।
5. শ্রীরামপুর ত্রয়ী কেন বিখ্যাত?
উত্তর : শ্রীরামপুর মিশনের উইলিয়াম কেরি, জে. মার্শম্যান এবং ওয়ার্ড একত্রে শ্রীরামপুর ত্রয়ী নামে পরিচিত। এদের উদ্যোগে বাংলায় পাশ্চাত্য শিল্প বিস্তারের পাশাপাশি মুদ্রণ শিল্পের বিকাশ ঘটে। এদের দ্বারা শ্রীরামপুর (১৮০০ খ্রিঃ) প্রেস প্রতিষ্ঠা হয়।
6. সংস্কৃত যন্ত্র বিখ্যাত কেন? 
উত্তর : উনিশ শতকের ছাপাখানার ইতিহাসে বিখ্যাত ছিল সংস্কৃত যন্ত্র। ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে মদনমোহন তর্কালঙ্কার ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যৌথভাবে কলকাতার ৬২নং আমহার্স্ট স্ট্রিটে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। সংস্কৃতযন্ত্র থেকে বিদ্যাসাগরের রচিত গ্রন্থ। প্রকাশিত হয়।
7. বটতলার প্রকাশনা কী?
উত্তর : উনিশ শতকের ছাপাখানা জগতে একটি এলাকার প্রকাশনীয় সংস্থা হিসাবে পরিচিত ছিল বটতলার প্রকাশন। সমগ্র জোড়াবাগান, শোভাবাজার, দর্জিপাড়া প্রভৃতি স্থান জুড়ে এই প্রকাশনা চলত। সস্তায় বিচিত্র প্রিয় ধর্মকথা, অশ্লীল কথাযুক্ত বই ছাপা ছিল-এর বৈশিষ্ট্য।
৪. শান্তিনিকেতন আশ্রম কী?
উত্তর : মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বােলপুরে নির্জনে ব্ৰত্ম উপাসনা করে এই আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এটিই শান্তিনিকেতন আশ্রম নামে পরিচিত।
9. রামমোহন প্রতিষ্ঠিত একটি বিদ্যালয় ও সেখানকার একজন ছাত্রের নাম লেখো।
উত্তর : ১৮২২ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু পাশ্চাত্য শিক্ষাদানের জন্য রামমোহন অ্যাংলো হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম একজন ছাত্র ছিলেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর : (প্রতিটি প্রশ্নের মান-4)
1. কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় তা বিশ্লেষণ করো।
উত্তর : ভূমিকা : বিংশ শতকে ও সরকারি উদ্যোগ বিজ্ঞানচর্চা ও কারিগরি শিক্ষার পর্যাপ্ত প্রসার ঘটেনি; তাই বিশিষ্ট আইনজীবী তারকনাথ পালিত ও জাতীয়তাবাদী নেতা রাসবিহারী ঘােষের উদ্যোগে কলকাতায় একটি বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। (২৯ মার্চ, ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে)।
        উদ্দেশ্য : ব্রিটিশ কর্মচারীদের ও চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন ছিল। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার চিন্তা করা হয়। এছাড়া নেটিভদের চিকিৎসার বিষয়টিও প্রাধান্য পেয়েছিল।
ভাষা মাধ্যম : প্রাচ্যবিদ্যার বিশারদ ড. টাইটলার চেয়েছিলেন এদেশীয় ভাষায় পশ্চিমীধারার চিকিৎসাবিদ্যা শিক্ষা দেওয়া হোক কিন্তু আলেকজান্ডার ডাফ চেয়েছিলেন পশ্চিমী শিক্ষা ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে দেওয়া উচিত।
        গভর্নর জেনারেলের ঘোষণা : কমিটির রিপোর্টকে খতিয়ে দেখে ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দের ২৮ জানুয়ারি গভর্নর জেনারেল এক নির্দেশনামা বলে কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করলেন।
        ভর্তির যোগ্যতা : প্রতিষ্ঠাবর্ষে ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে মেডিকেল কলেজের যাত্রা শুরু হল। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে ইংরেজি ও বাংলা বা হিন্দুস্থানি ভাষা জানা ১৪-২০ বছর বয়স্ককে ছাত্র হিসাবে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে।
        পাঠ্য বিষয় : কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রারম্ভিক পর্বের ছাত্রদের অ্যানাটমি, সার্জাটমি, সার্জারি, ওষুধ, প্রয়োগ ও ওষধ তৈরি বিষয়ে শিখতে হত। এছাড়া হাতে কলমে লেখার জন্য ছাত্রদের জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে ব্যাধি সম্পর্কে সচেতন করা হয়।
        মূল্যায়ন : সকল অধ্যক্ষের প্রচেষ্টায় এখানে বিশ্বমানের শিক্ষাদান ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। শিক্ষার্থীদের এই কলেজ থেকে যথেষ্ট সহায়তা পেয়ে বিজ্ঞানের মৌলিক গবেষণার কাজ এগিয়ে যায়।
2. বাংলার শিক্ষার ইতিহাসে শ্রীরামপুর মিশনারিদের অবদান লেখো।
   অথবা, মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস-এর অবদান কী ছিল?
উত্তর : ভূমিকা : ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিন্যাস ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে শ্রীরামপুর ত্রয়ীর অবদান অনস্বীকার্য।
        শ্রীরামপুর এয়ী :উইলিয়াম কেরি, উইলিয়াম ওয়ার্ড ও জোসুয়া মার্সম্যান-এর উদ্যোগে বাংলার হুগলির শ্রীরামপুরে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে এই ছাপাখানাটি গড়ে উঠেছিল। এরা তিনজন পরিচিত ছিল ‘শ্রীরামপুর ত্রয়ী’ নামে।
        শ্রীরামপুর ছাপাখানা স্থাপন : ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে ‘শ্রীরামপুর ত্রয়ী একটি ছাপাখানা স্থাপন করেন। সেখান থেকে তারা বাংলা ভাষায় বিভিন্ন পত্রপত্রিকা প্রকাশ করেন। আর এই ছাপাখানার সূত্র ধরে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধির পথ প্রশস্ত হয়।
        ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অভিজ্ঞতা : ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় থেকে উইলিয়াম কেরি যুক্ত ছিলেন। তিনি ওই কলেজের বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন।
        উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ধর্মপ্রচারের জন্য শ্রীরামপুর ত্রয়ী বাংলা ও ইংরেজি ভাষার বিস্তার ও বিকাশে উদ্যোগী হয়েছিলেন।
3. শান্তিনিকেতনে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার পটভূমি আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : বীরভূম জেলার বোলপুরের কাছে অবস্থিত একটি গ্রাম হল- শান্তিনিকেতন। পূর্বে ভুবনডাঙ্গা নামে এই স্থান পরিচিত ছিল।
        ব্ৰত্মবিদ্যালয় : ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ব্ৰত্মবিদ্যালয়', এরূপ সেখানেই তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন, তিনি প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে নিজের এবং অন্যান্য আশ্রমবাসীদের থাকার জন্য ভবন নির্মাণ করান যা প্রকৃতির মাধুর্যে লালিত।
        বিশ্বভারতীর ভাবনা : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘তপোবন' নামক প্রবন্ধে লিখেছেন যে, তপোবনের রয়েছে প্রকৃতির নিবিড় শান্ত রূপ, ঔপনিবেশিক শিক্ষার বাইরে তিনি এক বিকল্প শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শান্তি ও নিবিড় রূপের মধ্য ‘বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন।  উপসংহার : ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্বভারতী বিশ্ববদ্যালয়।
4. টীকা লেখো : জাতীয় শিক্ষা পরিষদ :
উত্তর : ভূমিকা : বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনকালে জাতীয় শিক্ষা ধারণার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ (১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে)।
        প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য : জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি হল—(ক) ব্রিটিশ প্রবর্তিত শিক্ষানীতির বিরোধিতা করা, (খ) দেশের প্রয়োজনে স্বদেশি ধাঁচে এক বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। কার্যাবলি :
        (ক) ন্যাশনাল কলেজ : সাধারণ বিজ্ঞান ও কলাবিদ্যা শিক্ষার জন্য জাতীয় শিক্ষা পরিষদ বউবাজারে বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ ও স্কুল প্রতিষ্ঠা করে।
        (খ) বিদ্যালয় : জাতীয় শিক্ষা পরষদের অধীনে ও উৎসাহে দেশের বিভিন্ন স্থানে (রংপুর, ঢাকা, দিনাজপুর) জাতীয় বিদ্যালয় গড়ে ওঠে।
        ব্যর্থতার কারণ : এই ব্যর্থতার কারণগুলি হল— (1) বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় অর্থসংকট দেখা দেয়।(2) বেতনের স্বল্পতার কারণে শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠান ত্যাগ।(3) চাকরির বাজারে প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত ডিগ্রি বা সার্টিফিকিটের গুরুত্বহীনতা ইত্যাদি।
উপসংহার : জাতীয়তাবাদী নেতাদের অর্থানুকুল্যে কলকাতার টাউন হলে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১৪ আগস্ট রাসবিহারী ঘোষের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় শিক্ষা পরিষদ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
  বিভাগ ‘ঙ’
৫) পনেরো-ষোলোটি বাক্যে যেকোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৫.১) বাংলায় ছাপাখানার বিকাশে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভূমিকা আলোচনা কর? 
উত্তরঃ  ভূমিকাঃ-উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বাংলা তথা সমগ্র ভারতে প্রকাশনা জগতের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় নাম। তিনি বাংলায় ‘হাফটোন’ পদ্ধতি, ‘রঙিন ব্লক’-এর সূচনা করেছিলেন। তিনি ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে তার নিজস্ব মুদ্রণ ও প্রকাশনা সংস্থা ইউ রায় অ্যান্ড সন্স’ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে তার পুত্র সুকুমার রায়ের প্রচেষ্টায় এই ; সংস্থার খ্যাতি বৃদ্ধি পায়।
ইউ রায় অ্যান্ডি সন্স-এর প্রতিষ্ঠা : উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বিদেশ থেকে আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র এনে ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে ‘ইউ রায় অ্যান্ড সন্স’নামে একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে এটি ছিল কলকাতার ৩৮/১, শিবনারায়ণ দাস লেনে। পরবর্তীকালে এর ঠিকানার পরিবর্তন ঘটেছিল।
ইউ রায় অ্যান্ড সন্স-এর উদ্যোগে ছাপাখানার বিকাশ
 হাফটোন ব্লকের ব্যবহার : উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছাপার বিষয় নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা করেন। তিনি ছাপার কাজে হাফটোন ব্লক তৈরি ও প্রয়োগের উদ্ভাবক ছিলেন। এর ফলে মুদ্রণ শিল্পে অভূতপূর্ব উন্নতি পরিলক্ষিত হয়।তিনি তার ইউ রায় অ্যান্ড সন্স’ থেকে প্রকাশিত বইয়ের প্রচ্ছদ ও ভিতরের পাতায় কীভাবে উন্নত ছবির ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা চালান। এক্ষেত্রে তিনি স্ক্রিন অ্যাডজাস্টার যন্ত্র, ডায়াফর্ম সিস্টেম প্রভৃতিব্যবহার করে সে যুগেও রংবেরঙের ছবি ছাপার ব্যবস্থা করেন।
 সুকুমার রায়ের প্রচেষ্টা : ছাপার বিষয়ে আরও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য তার সুযোগ্য পুত্র সুকুমার রায়কে লন্ডনে পাঠিয়েছিলেন। সুকুমার রায় পিতার উদ্ভাবনী দক্ষতার সঙ্গে তাঁর নিজস্বতা দিয়ে ইউ রায় অ্যান্ড সন্স’-কে একটি বিখ্যাত প্রকাশনা সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে সহায়তা করেছিলেন।
প্রকাশনা : ইউ রায় অ্যান্ড সন্স’ থেকে প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল— ‘টুনটুনির বই’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’‘ছেলেদের মহাভারত’ ইত্যাদি। এই সংস্থার অন্যতম উল্লেখযোগ্য অবদান হল সন্দেশ পত্রিকার প্রকাশ।
উপসংহার: উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী এবং সুকুমার রায় কেবলমাত্র অর্থ উপার্জনের জন্য ইউ রায় অ্যান্ড সন্স’-এর প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেননি। তারা এখান থেকে নিজেদের লেখা গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। ছাপার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে গিয়েছেন। তাই ছাপাখানার জগতে তাদের এই অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে।

ষষ্ট অধ্যায় - বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলনঃ বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

               বিভাগ ‘ক’
১) সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
১.১)
১.২) চৌরিচৌরার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোন আন্দোলন প্রত্যাহার করার চেষ্টা করা হয় –
উত্তরঃ (খ) অহিংস আন্দোলন
১.৩) খুদা ই খিদমতগার তৈরি করেন –
উত্তরঃ (ঘ) খান আব্দুল গহর খান
১.৪) নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস স্থাপিত হয় –
উত্তরঃ (ক) ১৯২০খ্রিঃ
১.৫) দেশপ্রান আখ্যা দেয়া হয়েছিল – উত্তরঃ (খ) বীরেন্দ্রনাথ শাসমলকে
১.৬) ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে নৌ বিদ্রোহ হয়েছিল –উত্তরঃ (খ) মুম্বাইতে (তলোয়ার জাহাজে)
১.৭) বারদৌলি সত্যাগ্রহ সময় ‘সর্দার’ উপাধি পান –
উত্তরঃ (গ) বল্লভ ভাই প্যাটেল
১.৮) কে সবরমতী আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন –
উত্তরঃ (ঘ) গান্ধীজি
১.৯) মিরাট ষড়যন্ত্র মামলার একজন অভিযুক্ত ছিলেন
উত্তরঃ (ক) ফিলিপ স্প্র্যাট
১.১০) স্বরাজ্য দল এর সভাপতি ছিলেন –
উত্তরঃ (খ) চিত্তরঞ্জন দাশ
                বিভাগ ‘খ’
২) যেকোনো ষোলো টি প্রশ্নের উত্তর দাও ( প্রতিটি উপ বিভাগ থেকে অন্তত একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে)
উপ-বিভাগ ২.১
** একটি বাক্য উত্তর দাও:
২.১.১) করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে – এটি কার উক্তি?
উত্তরঃ গান্ধীজি
২.১.২) সীমান্ত গান্ধী নামে কে পরিচিত?
উত্তরঃ খান আবদুল গফফর খান
২.১.৩) একা আন্দোলনের দুজন নেতার নাম লেখ।
উত্তরঃ মাদারী পাশী ও বাবা গরীব দাস
২.১.৪) ভারতে প্রথম কবে মে দিবস পালিত হয়?
উত্তরঃ ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দের পয়লা মে
উপ বিভাগ ২.২
** ঠিক বা ভুল নির্ণয় করো :
২.২.১) কংগ্রেস ও খিলাফত নেতারা একা আন্দোলনে সমর্থন জানায়।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.২) ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময়ে জমিদারদের বিরোধিতা নয় সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা ছিল কৃষক আন্দোলনের অন্যতম লক্ষ্য।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.৩) ফরওয়ার্ড ব্লক ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে একটি পৃথক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.৪) বারদৌলি সত্যাগ্রহ এর পর সরকার নিযুক্ত কমিটি ৬.০৩ শতাংশ খাজনা অনুমোদন করে।
উত্তরঃ ঠিক
উপ বিভাগ ২.৩
** ক স্তম্ভের সঙ্গে খ স্তম্ভ মিলাও
ক স্তম্ভ                                     খ স্তম্ভ
২.৩.১) ১৯২১ খ্রিস্টাব্দ        ক) সারা ভারত কিষান কংগ্রেস
২.৩.২) ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ       খ) মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা
২.৩.৩) ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ      গ) কানপুর ষড়যন্ত্র মামলা
২.৩.৪) ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ      ঘ) একা আন্দোলন
উত্তরঃ ২.৩.১) ১৯২১ খ্রিস্টাব্দ  –  ঘ) একা আন্দোলন ২.৩.২) ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ –  গ) কানপুর ষড়যন্ত্র মামলা ২.৩.৩) ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ –খ) মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা ২.৩.৪) ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ – ক) সারা ভারত কিষান কংগ্রেস
উপ বিভাগ ২.৫
** নিম্ন লিখিত বিবৃতি গুলির সঙ্গে সঠিক ব্যাখ্যা টি নির্বাচন করঃ
২.৫.১) বিবৃতিঃ আইন অমান্য আন্দোলনে ভারতের কৃষক সম্প্রদায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে শামীল হয়।
ব্যাখ্যা ১: কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি এই আন্দোলনের কর্মসূচি ভুক্ত হয় ।
ব্যাখ্যা ২: কৃষক সম্প্রদায় এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পায়।
ব্যাখ্যা ৩: আন্দোলনে কৃষি কর বিষয়টিতে জোর দেয়া হয়।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ১: কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি এই আন্দোলনের কর্মসূচি ভুক্ত হয় ।
২.৫.২) বিবৃতিঃ ঢাকা অনুশীলন সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয় ।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ৩: স্বদেশী আন্দোলনে কৃষকদের যুক্ত করার জন্য।
২.৫.৩) বিবৃতিঃ ব্রিটিশ সরকার ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে কৃষি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে ।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ১: চম্পারণ এর নীল চাষীদের চাপে নীল চাষ সম্পর্কে অনুসন্ধান করার জন্য।
২.৫.৪) বিবৃতিঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাইট উপাধি ত্যাগ করেন ।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ২: জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে।
               বিভাগ ‘গ’
৩) দুটি অথবা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
1. বারদৌলি সত্যাগ্রহ কী?
উত্তর : ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে গুজরাতের সুরাত জেলার বারদৌলি ‘ভারতের বিসমার্ক' নামে খ্যাত সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের নেতৃত্বে কৃষক চাষিরা খাজনা না দেওয়ার দাবিতে যে আন্দোলন করে তা বারদৌলি সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত।
2. রশিদ আলি দিবস কী?
উত্তর : রশিদ আলির মুক্তির দাবিতে মুসলিম ছাত্রলিগ ১১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র ধর্মঘট-এর ডাক দিলে সব ছাত্র সংগঠন এই ধর্মঘটে শামিল হয়। ডালহৌসি স্কোয়ারের দিকে আগুয়ান ছাত্র মিছিলের ওপর পুলিশ গুলি চালায় পরের দিন অর্থাৎ ১৯৪৬-এর ১২ ফেব্রুয়ারি রশিদ আলি দিবস-এর ডাক দেওয়া হয়।
3. মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা কী?
উত্তর : ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে কানপুর ষড়যন্ত্র মামলার পরিসমাপ্তির সঙ্গে কমিউনিস্ট নেতাদের দমিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে পরের বছর অর্থাৎ ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ৩১ জন বামপন্থী নেতার বিরুদ্ধে পাঁচ বছর ধরে যে মামলা চলছিল তা মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা নামে পরিচিত। এই মামলা Judicial Scandal নামে খ্যাত।
4. গান্ধিজির মতে ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের পবিত্র ঘটনা বলতে কী বোঝো?
উত্তর : গান্ধিজি অহিংস আন্দোলনে হিংসার আশ্রয়কে পছন্দ করতেন না। কিন্তু বাবা রামচন্দ্রের রায়বেরিলিতে কৃষক শ্রমিকদের নিয়ে জঙ্গী সংগঠন করার জন্য তৎপর হলে ব্রিটিশ সরকার ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে ১০ ফেব্রুয়ারি রামচন্দ্রকে গ্রেপ্তার করে। এই গ্রেপ্তারের ঘটনাকে গান্ধিজি পবিত্র ঘটনা বলেছেন।
5. ভাগচাষি বলতে কী বোঝো?
উত্তর : চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পর থেকে ভূস্বামীর জমি ভাড়া নিয়ে যে সমস্ত কৃষক | নিজেদের খরচে চাষবাস করত তাদের বলা হত ভাগচাষি।

বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-4]
1. ওয়ার্ক অ্যান্ড পেজেন্টস্ পার্টি সম্পর্কে আলোচনা করো।
অথবা,টীকা লেখো : ওয়ার্কস অ্যান্ড পেজেন্টস পাটি।
উত্তর : ভূমিকা : ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে ‘ওয়ার্কস অ্যান্ড পেজেন্টস্ পার্টি’ শ্রমিক ও কৃষকদের সংঘবদ্ধ করে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।
(i) উদ্ভব : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতে ব্যাপক হারে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয় এবং সরাসরিভাবে কাজ করার ব্যাপারে কমিউনিস্ট পার্টির নানা অসুবিধা থাকার তারা শ্রমিক ও কৃষকদের স্বার্থে 1925 খ্রিঃ 1 নভেম্বর ‘দিল লেবার স্বরাজ পার্টি অব দি ইন্ডিয়ান ন্যাশানাল কংগ্রেস' নামে কলকাতায় একটি সংগঠন গড়ে তােলা হয় পরে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ওয়ার্কস অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি।
(ii) সর্বভারতীয় দল : ‘ওয়ান্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির অনুরূপ বোম্বাই পাঞ্জাব প্রভৃতি স্ক্যানেও গড়ে ওঠে। এইভাবে ভারতের বিভিন্ন জায়গার শ্রমিক ও কৃষকদের দল গড়ে উঠতে থাকলে নেতারা এর জন্য কলকাতার একটি সর্বভারতীয় সম্মেলন আহ্বান করেন।
(ii) দাবি : এই দলের দাবিসমূহ হল—(i) জমিদারি প্রথার অবসান (ii) শ্রমিক ও কৃষকদের স্বার্থরক্ষা করা (ii) পূর্ণ স্বাধীনতা প্রভৃতি।
উপসংহার : এই পার্টি শ্রেণি সংগ্রাম সম্পর্কে শ্রমিক শ্রেণিকে সচেতন করে তোলে এবং তারা মনে করে যে, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করতে না পারলে রাজনৈতিক স্বাধীনতা মূল্যহীন হয়ে পড়বে।

             বিভাগ ‘ঙ’
৫) পনেরো-ষোলোটি বাক্যে যেকোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও :
1. আইন অমান্য আন্দোলনর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। এই আন্দোলনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো
অথবা, আইন অমান্য আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। এই আন্দোলন কতখানি সফল হয়েছিল?
উত্তর : ভূমিকা : ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে ১৯২৯ থেকে ১৯৩১ খ্রিঃ পর্যন্ত আইন অমান্য আন্দোলন এক সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। অসহযোগ আন্দোলনের পরে জাতীয় সংগ্রামে দ্বিতীয় বৃহত্তম গণঅভূত্থান হল আইন অমান্য আন্দোলন।
পটভূমিকা : সমকালীন ভারতবর্ষের নানা ঘটনাবলি ও ক্ষোভের পরিণতি হল আইন অমান্য আন্দোলন। যেমন : (i) বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা (ii) কমিউনিস্ট দলের উদ্ভব (iii) পুঁজিপতি শ্রেণির অসন্তোষ (iv) সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা। প্রথম পর্যায় :
আন্দোলনের সূচনা :
(i) লবণ সত্যাগ্রহ : সে সময় ভারতবাসীদের স্বহস্তে লবণ তৈরি করা দণ্ডনীয়। অপরাধ ছিল। এই অবস্থায় ১৯৩০ খ্রিঃ ১২ মাচঈ লবণ আইন ভঙ্গের উদ্দেশ্যে। গান্ধিজি সবরমতী আশ্রম থেকে গুজরাটের সমুদ্রতীরে ডান্ডি অভিমুখে ৭৮ জন সত্যাগ্রহীকে নিয়ে ঐতিহাসিক ডান্ডি অভিযান শুরু করেন। ৬ এপ্রিল ডান্ডিতে স্বহস্তে সমুদ্রের জল থেকে লবণ তৈরি করে লবণ আইন ভঙ্গ করেন এব আন্দোলনের সূচনা করেন।
(i) আন্দোলনের ব্যাপকতা : গান্ধিজির আহ্বানে আইন অমান্য আন্দোলনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ গুজরাট উপকূল থেকে দাবানলের মতো সমগ্র ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। মহা উল্লাসে সর্বত্রই চলতে থাকে লবণ তৈরি। কলকাতার মেয়র যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত প্রকাশ্য জনসভায় নিষিদ্ধ গ্রন্থ পাঠ করে আইন ভঙ্গ করে। উঃ পঃ সীমান্তে খান আর দুল গফফর খান-এর নেতৃত্বে খোদা-ই-খিদমতার দলের অনুচরেরা আন্দোলনকে তীব্র রূপ দেন।
(ii) সরকারি দমননীতি : আন্দোলনের ব্যাপকতা লক্ষ করে ব্রিটিশ সরকার সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে এবং আন্দোলনকে দমন করার জন্য নিষ্ঠুর দমননীতির আশ্রয় গ্রহণ করে। গান্ধিজি সহ প্রায় ৭৬০০০ সত্যাগ্রহীকে গ্রেফতার করা হয়। তাছাড়া বেত্রাঘাত, বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করা হয়।
দ্বিতীয় পর্যায়ে আইন অমান্য আন্দোলন : ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে লন্ডনে দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠক বসে। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গান্ধিজি এবং নারীসমাজের পক্ষ থেকে সরোজিনী নাইড় বৈঠকে যোগ দেন। গান্ধীজি বড়োলাট লর্ড উইলংডন-কে টেলিগ্রাম করে দমন নীতি বন্ধ করতে বলেন। কিন্তু তিনি এতে কর্ণপাত না করায় গান্ধিজি পুনরায় আইন অমান্য আন্দোলনের ডাক দেন।
(i) সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা : যখন সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে মুখর, তখন আন্দোলন দমন করার জন্য ব্রিটিশ সরকার এক কূটনৈতিক চাল দেয়। ১৯৩২-এর ১৬ আগস্ট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রামসে ম্যাকডােনাল্ড ‘সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা জারি করে। মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান ও হিন্দুদের জন্য পৃথক পৃথক নির্বাচনের অধিকার দিয়ে ভারতীয় জনমতকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করেন।
(ii) পুনা চুক্তি : গান্ধিজির জীবন বাঁচাতে অনুন্নত সম্প্রদায়ের নেতা ড. বি আর আম্বেদকর ও গান্ধিজির মধ্যে সমঝোতামূলক পুনা চুক্তি সম্পাদিত হয়। (ii) গুরুত্ব : (i) এই আন্দোলন ১৯৪২-এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনের পথকে প্রশস্ত করে দেয়। (i) এই আন্দোলন বহির্বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

সপ্তম অধ্যায় - বিশ শতকের ভারতের নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অন্দোলনঃ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ :
বিভাগ ‘ক’
১) সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
১.১) গান্ধী বুড়ি নামে পরিচিত ছিলেন –
উত্তরঃ (ক) মাতঙ্গিনী হাজরা
১.২) দিপালী সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন –
উত্তরঃ (ক) লীলা নাগ
১.৩) বুড়ি বালামের যুদ্ধে অংশ নেন –
উত্তরঃ (গ) বাঘা যতীন
১.৪) অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন –
উত্তরঃ (ঘ) শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু
১.৫) ‘মাস্টারদা’ নামে পরিচিত ছিলেন –
উত্তরঃ (গ) সূর্য সেন
১.৬) গদর পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন –
উত্তরঃ (ক) লালা হরদয়াল
(১.৭) দক্ষিণ ভারতের বিদ্যাসাগর নামে পরিচিত ছিলেন –
উত্তরঃ (গ) বীরেশলিঙ্গম পান্তুলু
১.৮) চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন –
উত্তরঃ (ঘ) সূর্য সেন
১.৯) ভারতের বিপ্লবী বাদের জননী বলা হয় –
উত্তরঃ (খ) মাদাম কামাকে
১.১০) মতুয়া ধর্মের প্রবর্তন করেন –
উত্তরঃ (গ) হরিচাঁদ ঠাকুর
      
    বিভাগ ‘খ’
২) যেকোনো 16 টি প্রশ্নের উত্তর দাও (প্রতিটি উপরিভাগ থেকে অন্তত একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে)
উপ বিভাগ: ২.১
একটি বাক্যে উত্তর দাও :
২.১.১) কে প্রথম বয়কট আন্দোলনের ডাক দেন?
উত্তরঃ কৃষ্ণ কুমার মিত্র
২.১.২) জয়শ্রী পত্রিকাটি কে প্রকাশ করেন?
উত্তরঃ বিপ্লবী লীলা নাগ
২.১.৩) রাসবিহারী বসু কি ছদ্মনামে জাপানে পালিয়ে যান?
উত্তরঃ পি. এন. ঠাকুর
২.১.৪) কবে রশিদ আলি দিবস পালিত হয়?  উত্তরঃ ১৯৪৬ খ্রিঃ ১২ ফেব্রুয়ারি
উপ বিভাগ: ২.২
** ঠিক না ভুল নির্ণয় করো :
২.২.১) কার লাইন সার্কুলারে বলা হয় যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তার ছাত্রদের আন্দোলন থেকে বিরত করতে না পারলে এই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অনুদান বন্ধ করা হবে এবং অনুমোদন বাতিল করা হবে।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.২) সূর্যসেনের অনুগামী অনন্ত সিং দেবেন দে ও  নির্মল সেন ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে রেলকর্মীদের বেতনের ১৭ হাজার টাকা লুট করে ছিলেন ।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.৩) যুগান্তর দলের কর্মী কমলা দাশগুপ্তকে বীণা দাস কে রিভলবার সরবরাহ করেছিলেন।
উত্তরঃ ঠিক।
২.২.৪) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন শুরু হলে রাজেন্দ্রনাথ মন্ডলের নেতৃত্বে নমঃশূদ্ররা বঙ্গভঙ্গ সমর্থন করে।
উত্তরঃ ঠিক
উপ বিভাগ: ২.৩
‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলাওঃ
ক স্তম্ভ                       খ স্তম্ভ
২.৩.১) ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে          (ক) লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা
২.৩.২) ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে          (খ) পুনা চুক্তি
২.৩.৩) ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে          (গ)  সূর্যসেনর ফাঁসি
২.৩.৪) ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে          (ঘ) সন্ডর্স হত্যা
উত্তরঃ ২.৩.১) ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে – (খ) পুনা চুক্তি ২.৩.২) ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে – (গ)  সূর্যসেনর ফাঁসি                   ২.৩.৩) ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে –  (ঘ) সন্ডর্স হত্যা ২.৩.৪) ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে –  (ক) লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা
উপ বিভাগ: ২.৫
 নিম্নলিখিত বিবৃতিগুলির সঙ্গে সঠিক ব্যাখ্যাটি নির্বাচন করঃ
২.৫.১) বিবৃতিঃ সরলা দেবী চৌধুরানী লক্ষ্মীর ভান্ডার স্থাপন করেন।
ব্যাখ্যা ১ তাঁর উদ্দেশ্য ছিল স্বদেশী জিনিসপত্রের ব্যবহার বাড়ানো।
ব্যাখ্যা ২ তাঁর উদ্দেশ্য ছিল দরিদ্রদের দান করা।
ব্যাখ্যা ৩ উদ্দেশ্য ছিল লক্ষীদেবীর পূজার আয়োজন করা।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ১ তাঁর উদ্দেশ্য ছিল স্বদেশী জিনিসপত্রের ব্যবহার বাড়ানো।
২.৫.২) বিবৃতিঃ মাতঙ্গিনী হাজরা তে গান্ধী বুড়ি বলা হয়।
ব্যাখ্যা ১ মাতঙ্গিনী হাজরা গান্ধীজির মত বৃদ্ধ বয়সেও আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন।
ব্যাখ্যা ২ মাতঙ্গিনী হাজরা গান্ধীজির অহিংস উপায় অবলম্বন করে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
ব্যাখ্যা ৩ মাতঙ্গিনী হাজরা মিছিলে গুলি বিদ্ধ হওয়ার আগে গান্ধীজির জয়ধ্বনি দিচ্ছিলেন।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ২ মাতঙ্গিনী হাজরা গান্ধীজির অহিংস উপায় অবলম্বন করে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
২.৫.৩) বিবৃতিঃ বিনয়-বাদল-দীনেশ অলিন্দ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
ব্যাখ্যা ১ এই যুদ্ধে সন্ডাস সাহেব নিহত হন।
ব্যাখ্যা ২ এই যুদ্ধে jackson সাহেব নিহত হন।
ব্যাখ্যা ৩ এই যুদ্ধে simpson সাহেব নিহত হন।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ৩ এই যুদ্ধে simpson সাহেব নিহত হন।
২.৫.৪) বিবৃতিঃ সূর্যসেন ফাঁসিতে প্রাণ বিসর্জন দেন।
ব্যাখ্যা ১ তিনি চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে নেতৃত্ব দেন।
ব্যাখ্যা ২ তিনি অলিন্দ যুদ্ধে অংশ নেন।
ব্যাখ্যা ৩ তিনি আলিপুর বোমা মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ১ তিনি চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে নেতৃত্ব দেন।
          বিভাগ ‘গ’
৩) দুটি অথবা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

1.গদর পার্টি কবে কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করা হয় বা গঠিত হয়?
উত্তর : পাঞ্জাব থেকে নির্বাসিত হরদয়াল ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার সানফ্রান্সিসকোতে প্রবাসী ভারতীয়দের নিয়ে গদর পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। এই দলের উদ্দেশ্য ছিল ভারতের স্বাধীনতা অর্জন করা।
2. অলিন্দ যুদ্ধ কাকে বলে?
উত্তর : বেঙ্গল ভলিন্টিয়ার্স এর তিনজন বিপ্লবী বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত বাংলার ব্রিটিশ শাসনের মূল কেন্দ্র রাইটার্স বিল্ডিং আক্রমণ করে তারা কারা। বিভাগের অত্যাচারী ইনসপেক্টর জেনারেল সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করে (১৯৩০ খ্রি. ৮ ডিসেম্বর) এতে তিন যুবকের সঙ্গে ইংরেজ লড়াই শুরু হয় যা অলিন্দ যুদ্ধ নামে পরিচিত।
3. হোমরুল লিগ কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন? এর অর্থ কী?
উত্তর : ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে শ্রীমতী অ্যানি বেসান্ত এর চেষ্টায় হোমরুল লিগ প্রতিষ্ঠা হয়। এর অর্থ হল স্বায়ত্তশাসন।
4. গান্ধিবুড়ি কাকে কেন বলা হয়?
উত্তর : মাতঙ্গিনী হাজরাকে গান্ধিবুড়ি বলা হয়। মাতঙ্গিনী হাজরাকে গান্ধিবুড়ি বলার কারণ তিনি মহাত্মা গান্ধির আদর্শে পরিচালিত হয়েছিলেন এবং গান্ধিজির নির্দেশকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন।
5. বয়কট ও স্বদেশি কথার অর্থ কী?
উত্তর : বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ সংগ্রামের অস্ত্র নিয়ে হিসাবে ব্রিটিশ রাজ্যের বিরুদ্ধে বয়কট ও স্বদেশি এই নীতি গ্রহণ করেন। বয়কট শব্দটির অর্থ ব্রিটিশ পণ্য বর্জন এবং স্বদেশি শব্দের অর্থ স্বদেশি দ্রব্যের ব্যবহার।


বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-4]

1. ‘দীপালি সংঘ’ সম্পর্কে যা জানো লেখো।
অথবা, সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের সময় দীপালি সংঘে’র ভূমিকা আলোচনা করো। 
উত্তর : সূচনা : বিংশ শতকের গোড়ার দিকে জাতীয় আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গড়ে ওঠা নারী সংগঠনগুলির মধ্যে দীপালি সংঘ উল্লেখযোগ্য।
প্রতিষ্ঠা : ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে লীলা নাগ ঢাকায় ‘দীপালি সংঘ’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কর্মকান্ত : দীপালি সংঘের উদ্যোগে প্রথমে দীপালি বিদ্যালয় এবং ১২টি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে ওঠে। এ ছাড়া ঢাকায় নারীশিক্ষা মন্দির শিক্ষাভবন এবং মুসলমান মেয়েদের জন্য কামারুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়। মাস্টারদা সূর্য সেনের সংস্পর্শে দীপালি সংঘ একটি সক্রিয় গুপ্ত সমিতিতে পরিণত হয়।
ছাত্রী সংঘ : ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে ছাত্রীদের নিয়ে দীপালি সংঘ গঠন করে ‘শ্রীসংঘ।
 মহিলা সত্যাগ্রহ সমিতি : সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে কলকাতায় ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেসের অধীন মহিলা সত্যাগ্রহ সমিতি, প্রতিষ্ঠিত হলে তাতে দীপালি সংঘের সদস্যরাও যোগদান করেন।
মূল্যায়ন : দীপালি সংঘ সার্বিক দিকে দ্বৈত ভূমিকা পালন করে, যেমন—একদিকে মহিলাদের শিক্ষিত ও আধুনিক করে তােলে অন্যদিকে তাদের মধ্যে বিপ্লবী ভাবাদর্শে উদ্ভাসিত করে।

2. সূর্যসেন স্মরণীয় কেন?
অথবা, টীকা লেখো : চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন।
উত্তর :সূচনা : বাংলা তথা ভারতের বিপ্লববাদী আন্দোলনের অন্যতম প্রথম সংগঠক ছিলেন চট্টগ্রাম বিদ্রোহের মুখ্যনায়ক ‘মাস্টারদা সূর্যসেন।
 বিপ্লবী তৎপরতা : চট্টগ্রামের উমাতারা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক সুর্যসেন। তার ৬৪ জন ছাত্র ও সহযোগীদের নিয়ে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১ এপ্রিল ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি’ গঠন করেন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১৮ এপ্রিল মধ্যরাতে সূর্যসেনের নেতৃত্বে বিপ্লবীবাহিনী ব্রিটিশ সামরিক অস্ত্রগার লুণ্ঠন করেন।
     সূর্যসেনের ফাসি : ব্রিটিশ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে শেষ পর্যন্ত বিপ্লবীদের পরাজয় ঘটে এবং মাস্টারদা ধরা পড়েন (১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি) এবং ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম জেলে তার ফাসি হয়। স্বাধীন সরকার প্রতিষ্ঠা ; তারা টেলিফোন, টেলিগ্রাফের তার বিচ্ছিন্ন করে চট্টগ্রামে একটি স্বাধীন বিপ্লবী সরকার’-এর প্রতিষ্ঠা করেন।
 উপসংহার : সূর্যসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রগার লুণ্ঠনের ঘটনা ছিল চমকপ্রদ ও প্রশংসনীয়। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার চট্টগ্রাম অস্ত্রগার লুণ্ঠনের সঙ্গে যুক্ত জালালাবাদ চট্টগ্রাম যুদ্ধকে ইংরেজদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংগ্রামের প্রথম দৃষ্টান্ত বলে। অভিহিত করেছেন।

3.টীকা লেখো : অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি।
উত্তর : ভূমিকা : বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের নিরস্ত্র করার জন্য সরকারের মুখ্যসচিব আর, ডবলিউ. কার্লাইন নামে পরিচিত।
প্রেক্ষাপট : বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্ররা দলে দলে অংশ নেয়। সরকারি। স্কুল, কলেজ, ডিগ্রি বর্জন করে; পিকেটিং করে তারা বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে নতুন প্রাণের সঞ্জার করে।
অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি : কার্লাইল সারকুলারের বিরুদ্ধে শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু রিপন কলেজে চতুর্থ বর্ষে পড়ার সময় ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ৪ নভেম্বর অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।
 ফলাফল : অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি গড়ে ওঠার ফলে ছাত্রদের মধ্যে উদ্দীপনার সঞ্চার হয়। সরকারি নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি ব্রিটিশ বিরোধী মানসিকতাকে আরও দৃঢ় করেছিল।
 উদ্দেশ্য : অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল— 
1. বিদেশি শিক্ষাকে বয়কট করে স্বদেশি শিক্ষায় আগ্রহ বৃদ্ধি করা।
2. ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ করে জাতীয় আন্দোলন বৃদ্ধি করা।
3. শাস্তি প্রাপ্ত ছাত্রদের আলাদা শিক্ষালাভের ব্যবস্থা করা।
 উপসংহার : শচীন্দ্রপ্রসাদের ভূমিকায় ব্রিটিশ সরকার ক্ষুদ্ধ হয়। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটির অবদান কোনোক্রমেই ভোলার নয়।

6. রশিদ আলি দিবস’ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর : ভূমিকা : রশিদ আলি ছিলেন আজাদ হিন্দ বাহিনীর ক্যাপটেন। ব্রিটিশ সরকারের। সামরিক আদালতে তাকে ৭ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তার প্রতিবাদে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় গণ আন্দোলন হয় এবং ১২ ফেব্রুয়ারি ‘রশিদ আলি দিবস হিসেবে পালিত হয়।
 রশিদ আলি দিবস : ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে ১০ ফেব্রুয়ারি দিল্লির লালকেল্লাতে আজাদ হিন্দ ফৌজের অফিসার ক্যাপটেন রশিদ আলির বিচার হয় ও তাঁকে সাত বছরের কারাদণ্ড দান করা হয়। এই ঘটনায় কলকাতা পুনরায় উত্তাল হয়ে ওঠে এবং ছাত্র। বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
সরকারের দমন নীতি : আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ বাঁধে এবং সরকারি মতে ৮৪ জন নিহত ও ৩০০ জন আহত হয়। যদিও বেসরকারি মতে নিহতের সংখ্যা ছিল ২০০-এর বেশি।
 তাৎপর্য :
 (১) রশিদ আলি দিবসের প্রভাবে ১৩-১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে ঢাকাসহ বহরমপুর, কৃয়নগর, রাণাঘাট, মেদিনীপুর প্রভৃতি শহরেও ধর্মঘট পালিত হয়।
(২) এটি স্থানীয় বা প্রাদেশিক ঘটনার পরিধি ছাড়িয়ে জাতীয় চরিত্র নেয়।
  (৩) এই আন্দোলনের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য জোরদার হয়ে ওঠে।
 (৪) এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অহিংস গণ আন্দোলন হিংসাত্মক আন্দোলনে পরিণত হয়।
উপসংহার : আজাদ হিন্দ বাহিনীর সৈন্য রশিদ আলির বিচারকে কেন্দ্র করে যে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়েছিল তা ভারতীয় জনমানসে প্রবল উৎসাহ সৃষ্টি করেছিল।

অষ্টম অধ্যায় - ঔপনিবেশিক ভারতঃ বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব(১৯৪৭-১৯৬৪)
            বিভাগ ‘ক’
১) সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :
১.১) কাশ্মীরের মহারাজ ছিলেন –উত্তরঃ (ক) হরি সিং
১.২) স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন –
উত্তরঃ (গ) রাজেন্দ্র প্রসাদ
১.৩) গোয়া কবে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয় –
উত্তরঃ (ঘ) ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে
১.৪) রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন কবে গঠিত হয় –
উত্তরঃ (খ) ১৯৫৩ খ্রীঃ
১.৫) ট্রেন টু পাকিস্তান গ্রন্থটি কে রচনা করেন –
উত্তরঃ (খ) খুশবন্ত সিং
১.৬) দেশীয় রাজ্য ছিল না –
উত্তরঃ (ক) বোম্বে
১.৭) সরকারি ভাষা আইন পাস হয় –
উত্তরঃ (ঘ) ১৯৬৩ খ্রীঃ
১.৮) ভারতের গণপরিষদের প্রথম সভাপতি ছিলেন –
উত্তরঃ (গ) ড. রাজেন্দ্রপ্রসাদ
১.৯) উর্দু কোন রাজ্যের প্রধান সরকারী ভাষা –
উত্তরঃ (ঘ) জম্মু ও কাশ্মীর
১.১০) স্বাধীন ভারতের প্রথম গভর্নর জেনারেল ছিলেন –
উত্তরঃ (ক) লর্ড মাউন্টব্যাটেন
         বিভাগ ‘খ’
২) যেকোনো ষোলটি প্রশ্নের উত্তর দাও(প্রতিটি উপজেলা থেকে অন্ততঃ একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে)
উপ বিভাগ:২.১
 একটি বাক্যে উত্তর দাও
২.১.১) গোয়া কাদের উপনিবেশ ছিল?  উত্তরঃ পর্তুগালের
২.১.২) ভারত বর্ষ কবে স্বাধীনতা লাভ করে?    উত্তরঃ ১৯৪৭ খ্রী ১৫ ই আগস্ট
২.১.৩) অপারেশন পোলো কি?      অংঋউত্তরঃ ভারতীয় সেনার হায়দ্রাবাদ অভিযানকে
২.১.৪) পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ভাষা কি?  উত্তরঃ বাংলা
উপ-বিভাগ: ২.২
** ঠিক বা ভুল নির্ণয় করো :
২.২.১) ২১৬ টি দেশীয় রাজ্য সন্নিহিত প্রতিযোগীর সঙ্গে যুক্ত হয়।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.২) দেশভাগের পর গঠিত পাকিস্তানের মূলত মূলত দুটি অংশ ছিল – পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.৩) সরকারি ভাষা কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় যে ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি কাজে ইংরেজি ভাষার ব্যবহার চলবে।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.৪) ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় আয়তনে সর্ববৃহৎ দেশীয় রাজ্য ছিল হয়দ্রাবাদ।
উত্তরঃ ঠিক
উপ বিভাগ: ২.৩
** ‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলাওঃ
ক স্তম্ভ                                       খ স্তম্ভ
২.৩.১) লৌহমানব                         (ক) কে এস দর
২.৩.২) দেশীয় রাজ্য দপ্তর                 (খ) বল্লভ ভাই প্যাটেল
২.৩.৩) ভাষাভিত্তিক প্রদেশ কমিশন        (গ)  বল্লভ ভাই প্যাটেল
২.৩.৪) সরকারি ভাষা কমিশন             (ঘ) সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
উত্তর: ২.৩.১) লৌহমানব – (খ) বল্লভ ভাই প্যাটেল ২.৩.২) দেশীয় রাজ্য দপ্তর – (গ)  বল্লভ ভাই প্যাটেল২.৩.৩) ভাষাভিত্তিক প্রদেশ কমিশন – (ক) কে এস দর ২.৩.৪) সরকারি ভাষা কমিশন- (ঘ) সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
উপ বিভাগ: ২.৫
নিম্নলিখিত বিবৃতিগুলির সঙ্গে সঠিক ব্যাখ্যাটি নির্বাচন করঃ
২.৫.১) বিবৃতি: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত স্বাধীন হয়।
ব্যাখ্যা ১: এর মাধ্যমে ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটে।
ব্যাখ্যা ২: এর মাধ্যমে ইংরেজি পরাজয় হয়।
ব্যাখ্যা ৩: এর মাধ্যমে শোষণের অবসান ঘটে।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: এর মাধ্যমে ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটে।
২.৫.২) বিবৃতি: রাজ্য দপ্তর গঠিত হয় ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে।
ব্যাখ্যা ১: এই ঘটনা ছিল স্বাধীনতার ফলশ্রুতি।
ব্যাখ্যা ২: দেশীয় রাজ্যগুলির ভারত ভক্তি ব্যাপারে এই দপ্তর গঠিত হয়।
ব্যাখ্যা ৩: এই দপ্তরের মাধ্যমে নানা অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নেয়া হয়।
উত্তর: ব্যাখ্যা ২: দেশীয় রাজ্যগুলির ভারত ভক্তি ব্যাপারে এই দপ্তর গঠিত হয়।
২.৫.৩) বিবৃতি: ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু হিন্দি ভাষা প্রচলন করতে চেয়েছিলেন।
ব্যাখ্যা ১: তিনি সারা ভারতে একই ভাষা প্রচলন করতে চেয়েছিলেন।
ব্যাখ্যা ২: তিনি ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের পক্ষপাতী ছিলেন।
ব্যাখ্যা ৩: তিনি ভাষার ব্যাপারে দেশীয় রাজ্যগুলিকে স্বাধীনতা দেওয়া পক্ষপাতী ছিলেন।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: তিনি সারা ভারতে একই ভাষা প্রচলন করতে চেয়েছিলেন।
২.৫.৪) বিবৃতি: ভারতের ইতিহাসে স্বাধীনতা প্রাপ্তির পরবর্তী পাঁচ বছর পূনর্বাসনের যুগ নামে পরিচিত।
ব্যাখ্যা ১: এই সময় উদ্বাস্তুদের  ত্রাণ ও পুনর্বাসন এর ওপর জোর দেয়া হয়।
ব্যাখ্যা ২: এই সময় পুনর্বাসনের পরিকল্পনা রচিত হয়।
ব্যাখ্যা ৩: স্বাধীনতার পরের পাঁচ বছরে গৃহহীন ভারতীয়দের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: এই সময় উদ্বাস্তুদের  ত্রাণ ও পুনর্বাসন এর ওপর জোর দেয়া হয়।

         বিভাগ ‘গ’
৩) দুটি অথবা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

1. রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন কী?
উত্তর : ভাষার ভিত্তিতে ভারতীয় রাজ্যগুলির সীমানা পুনর্গঠনের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে জহরলাল নেহরু গঠন করেন। এই কমিশনের নেতৃত্বে ছিলেন সৈয়দ ফজল আলি। এই কমিশন রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন নামে পরিচিত।
2. প্রথম ভাষা কমিশন কবে ও কী উদ্দেশ্যে গঠিত হয় ?
উত্তর : ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে বিজিবরের সভাপতিত্বে প্রথম ভাষা কমিশন গঠিত হয়েছিল। হিন্দিকে সরকারি ভাষা রূপে গ্রহণ করা হবে কিনা এই বিষয়ে আলোচনার জন্য কমিশন গঠিত হয়েছিল।
3.দেশভাগ ও উদ্বাস্তু সমস্যা সম্পর্কে জানা যায় এমন দুটি গ্রন্থের নাম লেখো ?
উত্তর : দেশভাগ ও উদ্বাস্তু সমস্যা সম্পর্কে জানা যায় এমন দুটি গ্রন্থ হল— (i) খুশবন্ত সিং-এর A train to Pakistan. (ii) প্রফুল্ল চক্রবর্তীর প্রান্তিক মানব।
4. রাজ্য পুনর্গঠন সম্পর্কিত কমিশনের সদস্যদের নাম উল্লেখ করো।
উত্তর : রাজ্য পুনর্গঠন সম্পর্কিত কমিশনের দুই সদস্য ছিলেন কে, এম, পানিক্কর এবং হৃদয়নাথ কুরু।
5. ভারত শাসন আইন কাকে বলে?
উত্তর : ভারতে সাংবিধানিক সংস্কার বিষয়ে একটি কার্যকারী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে স্যার স্যামুয়েল হোর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্স-এ সাংবিধানিক সংস্কার বিষয়ক বিল উপস্থাপন করেন। কিছু সংশোধনের। পর ২ আগস্ট বিলটি রাজার সম্মতি লাভ করে এটাকেই ভারত শাসন আইন বলে।
6. ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় কী কী সমস্যা ছিল?
উত্তর : ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় বহুবিধ সমস্যায় ভারত জর্জরিত ছিল। ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এবং পূর্বাঞ্চলে দাঙ্গা দেখা দিয়েছিল। এই দাঙ্গায় বহুসংখ্যক মানুষের মৃত্যু ঘটেছিল। এর ফলে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছিল। যা কাম্য ছিল না।

বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর : [প্রতিটি প্রশ্নের মান-4]

৪.১) কাশ্মীর সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করো।
৪.২) হায়দ্রাবাদ কীভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ