বাংলা সহায়ক

শব্দ |শব্দের শ্রেণিবিভাগ |shobdo|shobder shrenibibhag|BanglaSahayak.com


শব্দের শ্রেণিবিভাগ:

শব্দ কী ?

বিভিন্ন বর্ণ দিয়ে তৈরি, যাদের নির্দিষ্ট অর্থ থাকে যা বাক্যে ব্যবহৃত হয় তাকে শব্দ বলে।

 শব্দকে অর্থগত ও গঠনগত এই দুই দিক দিয়ে ভাগ করা যায়।


শব্দের অর্থগত শ্রেণিবিভাগ:

গঠনগত দিক দিয়ে শব্দকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা -

ক) যৌগিক শব্দ,    খ) রূঢ় শব্দ,                    গ) যোগরূঢ় শব্দ 


যৌগিক শব্দ :

যে শব্দের অর্থ প্রকৃতি-প্রত্যয়ের সম্মিলিত অর্থ থেকেই পাওয়া যায় তাকে যৌগিক শব্দ বলে।

যেমন- স্মরণীয়, গায়ক ইত্যাদি।


স্মরণীয় শব্দটির অর্থ (স্মৃ +অনীয়) অর্থাৎ যা মনে রাখার মতো।

গায়ক শব্দটির অর্থ (গা+ণক) অর্থাৎ যিনি গান করেন। 

শব্দ দুটির প্রকৃতি-প্রত্যয়জাত অর্থই এর অর্থ হিসাবে স্বীকৃত। 


রূঢ় শব্দ :

যে শব্দের প্রচলিত অর্থের সঙ্গে বুৎপত্তিগত অর্থ বা প্রকৃতি প্রত্যয়জাত অর্থের কোনো সম্পর্ক নেই তাকে রূঢ় শব্দ বলে।

যেমন - হরিণ, মন্ডপ, প্রবীণ ইত্যাদি।


হরিণ শব্দের প্রকৃতি-প্রত্যয়জাত অর্থ হল 'যে হরণ করে' কিন্তু সেই অর্থে আমরা হরিণ শব্দ ব্যবহার করি না । হরিণ বলতে একটি বিশেষ প্রাণিকেই বোঝায়। অর্থাৎ বুৎপত্তিগত অর্থের সঙ্গে এই অর্থের কোন যোগ নেই।


যোগরূঢ় শব্দ :

যে শব্দের প্রচলিত অর্থের সঙ্গে বুৎপত্তিগত অর্থ বা সম্পর্ক থাকলেও, অন্য অর্থগুলির থেকে একটি অর্থই বিশেষ হয়ে যায়, তাকে যোগরূঢ় শব্দ বলে।

 যেমন - পঙ্কজ, বাঁশি ইত্যাদি।


পঙ্কজ শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থ হল 'পঙ্কে জন্মায় যা' । অথচ পঙ্কজ বলতে আমরা 'পদ্ম' বুঝি। 'পদ্ম' পাঁকে জন্মায় যেমন তেমনি শ্যাওলা, কেঁচো, পাঁকাল প্রভৃতিও পাঁকে জন্মায় ।কিন্তু 'পঙ্কজ' বলতে এসব না বুঝিয়ে শুধু পদ্ম বোঝায় । এক্ষেত্রে 'পঙ্কজ' শব্দের প্রকৃতি প্রত্যয় অর্থের সঙ্গে প্রচলিত অর্থের যোগ আছে, কিন্তু অনেকগুলি সম্ভাব্য অর্থের মধ্যে একটি অর্থই প্রচলিত হয়।


শব্দের গঠনগত শ্রেণিবিভাগ:

গঠনগত দিক দিয়ে শব্দকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।

যথা- মৌলিক শব্দ ও সাধিত শব্দ।


মৌলিক শব্দ :

যেসব শব্দকে আর ভাঙা যায় না বা শব্দটির থেকে ছোটো খণ্ডে ভাঙলে তার কোনো অর্থ পাওয়া সম্ভব নয়, সেই জাতীয়  অবিভাজ্য শব্দগুলিকে  মৌলিক বা সিদ্ধ শব্দ বলে।

যেমন- লাল,নীল, সাদা,কালো, হলুদ, সবুজ 

হাত,পা,মুখ, মাথা,নাক, চোখ,কান 

এক,দুই ,তিন, চার, পাঁচ, ছয়,সাত,আট 

দিন, রাত, হাতি, ঘোড়া,জল, বাবা,মা ইত্যাদি আরও অসংখ্য শব্দ। 


সাধিত শব্দ:

যেসব শব্দকে ভাঙলে ছোটো কয়েকটি অর্থপূর্ণ শব্দ বা অন্যক্ষেত্রে মূল শব্দটির সঙ্গে অর্থ সম্পর্কযুক্ত শব্দাংশ বা খণ্ড পাওয়া যায় সেগুলিকে সাধিত শব্দ বলে।


যেমন- আপাদমস্তক,ডাক্তারবাবু, বিয়েবাড়ি, ফুটন্ত, পাণ্ডিত্য ইত্যাদি।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ