বাঙালির চলচ্চিত্রের ইতিহাস

১। বাংলা চলচ্চিত্রে সত্যজিৎ রায়ের অবদান
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান ঠিক তেমনি বাংলা চলচ্চিত্রে সত্যজিৎ রায়ের অবদান রয়েছে। সত্যজিৎ রায় ভারতীয় চলচ্চিত্রকারদের মধ্যে তর্কাতীতভাবে শ্রেষ্ঠ পরিচালক রূপে পরিগণিত । উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর পৌত্র, সুকুমার রায়ের পুত্র সত্যজিৎ রায় শৈশব থেকেই সংস্কৃতির আঙিনায় বড়ো হয়েছেন।
সত্যজিৎ রায় সন্দেশ পত্রিকার অন্যতম সম্পাদক ছিলেন। কলকাতার ফিল্ম সোসাইটি আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা সত্যজিৎ রায়। চিত্রনির্মাণ কর্ম তাঁর জীবনের সঙ্গে যুক্ত। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই দুই কথাসাহিত্যিক তাঁর চিন্তা-চেতনার জগতকে ভাবিয়েছেন। সত্যজিৎ রায়ের প্রথম সিনেমা ‘পথের পাঁচালী’ প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সিনেমাটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ মানবিক তথ্যসমৃদ্ধ চিত্রের সম্মান লাভ করে । ‘পথের পাঁচালী’ , ‘অপুর সংসার’ ও ‘অপরাজিত’ এই তিনটি সিনেমা বা অপু ত্রয়ী তাঁর জীবনের সেরা সৃষ্টি। এই তিনটি সিনেমা সত্যজিৎ রায়কে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দিয়ে ভারতীয় সিনেমাকে বিশ্বের সিনেমা মানচিত্রে স্থান করে দিয়েছিল।
১৯৬৪ তে রবীন্দ্রনাথের ‘নষ্টনীড়’ অবলম্বনে ‘চারুলতা’ সিনেমাটি পরিচালনা করেন । এই সিনেমায় চারুলতার একাকীত্ব আধুনিক কালের গৃহকর্ত্রীর মনোবেদনার সঙ্গে সমীকৃত হয়ে উঠেছে । এছাড়া মহানগর, তিনকন্যা ,অভিযান, কাপুরুষ মহাপুরুষ, জলসাঘর সমালোচকদের সপ্রশংস অভিনন্দন লাভে সমর্থ হয়। শিশু চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে গুপী গাইন বাঘা বাইন ,হীরক রাজার দেশে ছাড়াও তাঁর নিজের সৃষ্ট গোয়েন্দা কাহিনী অবলম্বনে সোনার কেল্লা , জয় বাবা ফেলুনাথ শিশু ও বয়স্কদের সমানভাবে মনোরঞ্জন করেছে। এছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বী, জন অরণ্য, শতরঞ্জ কী খিলাড়ি, ঘরে-বাইরে, গণশত্রু, আগন্তুক প্রভৃতি চলচ্চিত্র সত্যজিৎ রায়ের অসামান্য চিত্র পরিচালনার ক্ষমতার সাক্ষ্য দেয়।
দেশ-বিদেশের বহু পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন সত্যজিৎ রায় । ১৯৯২ সালে সমগ্র সিনেমার প্রতি অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য সিনেমার শ্রেষ্ঠ পুরস্কার অস্কার লাভ করেন।
২। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ঋত্বিক ঘটকের অবদান
বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিচালক ঋত্বিক ঘটক খুব বেশি ছবি করেননি কিন্তু যে কয়েকটি ছবি তিনি করেছেন তা বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকরা মনে রাখবে। ১৯৫০ সালে নিমাই ঘোষের ছিন্নমূল সিনেমায় অভিনেতা ও সহকারি পরিচালক হিসেবে তাঁর আবির্ভাব ঘটে।
ঋত্বিক ঘটকের প্রথম সিনেমা নাগরিক ১৯৫২ সালে প্রকাশিত হয়। বাংলা সিনেমা ক্ষেত্রে নাগরিক একটি মাইলফলক রূপে পরিগণিত হয়ে থাকে । সমাজবাস্তবতার এমন সুনিপুণ চলচ্চিত্রায়ন ইতিপূর্বে এমন ভাবে আর দেখা যায়নি। ১৯৫৮ তে সুবোধ ঘোষের গল্প অবলম্বনে অযান্ত্রিক নির্দেশনা করেন যেখানে একটি যন্ত্র ও তার মালিকের অদ্ভুত মানবিক সম্পর্ক বন্ধনের চিত্র ধরা পড়ে।
তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে মেঘে ঢাকা তারা (১৯৬০), কোমল গান্ধার (১৯৬১) এবং সুবর্ণরেখা (১৯৬২) অন্যতম; এই তিনটি চলচ্চিত্রকে ট্রিলজি বা ত্রয়ী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়, যার মাধ্যমে কলকাতার তৎকালীন অবস্থা এবং উদ্বাস্তু জীবনের রুঢ় বাস্তবতা চিত্রিত হয়েছে। হিন্দু বাঙালি শরণার্থীর দুর্দশার কথা বলা হয়েছে।দেশভাগের যন্ত্রণা নিয়ে তৈরি ঋত্বিকের একাধিক ছবিতে মর্মস্পর্শী সংলাপ ব্যবহার হয়েছে। সুবর্ণরেখার শুরুতেই শোনা যায় এমন সংলাপ ‘রাতে কোন যুবক ঘুমাবেন না’।
অদ্বৈত মল্লবর্মণের তিতাস একটি নদীর নাম উপন্যাস অবলম্বনে তিতাস একটি নদীর নাম নামে একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায় ১৯৭৩ সালে। পরের বছর তাঁর শেষ চলচ্চিত্র যুক্তি তক্কো গপ্পো প্রকাশিত হয়। এটি ঋত্বিক ঘটকের আত্মজৈবনিক ছায়াছবি এবং এর নায়ক নীলকন্ঠের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন পরিচালক স্বয়ং।
চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটক মনেপ্রাণে মার্কসীয় আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। তাই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শিল্প সৃষ্টি করতে চাইলেও বামপন্থা এবং মানবতাকে তিনি কখনোই ত্যাগ করতে পারেননি। সমালোচকরা ঋত্বিক ঘটকের সিনেমা অতি নাটকীয়তা ও ভারসাম্যহীনতার কথা বললেও আজকের দর্শক জানেন অনেক ক্ষেত্রেই তিনি সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা চলচ্চিত্র-প্রতিভা। আবেগে, মননে, সংলাপে,দৃশ্যের সংঘর্ষ নির্মাণে তাঁর সিনেমা সম্পূর্ণ অভিনব।
৩। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মৃণাল সেনের অবদান
বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগে ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে স্বীকৃতি লাভ করেছেন যে কজন পরিচালক তাঁদের মধ্যে অন্যতম মৃণাল সেন। ১৯৫৫ সালে মৃণাল সেনের প্রথম পরিচালিত ছবি রাত-ভোর মুক্তি পায়। এই ছবিটি বেশি সাফল্য পায় নি। তার দ্বিতীয় ছবি নীল আকাশের নিচে তাকে স্থানীয় পরিচিতি এনে দেয়। তার তৃতীয় ছবি বাইশে শ্রাবন থেকে তিনি আন্তর্জাতিক পরিচিতি পান।
১৯৬৯ সালে তার পরিচালিত ছবি ভুবন সোম মুক্তি পায়। এই ছবিতে বিখ্যাত অভিনেতা উৎপল দত্ত অভিনয় করেছিলেন। এই ছবিটি অনেকের মতে মৃণাল সেনের শ্রেষ্ঠ ছবি। তার কলকাতা ট্রিলোজি অর্থাৎ ইন্টারভিউ (১৯৭১), কলকাতা ৭১ (১৯৭২) এবং পদাতিক (১৯৭৩) ছবি তিনটির মাধ্যমে তিনি তৎকালীন কলকাতার অস্থির অবস্থাকে তুলে ধরেছিলেন। মধ্যবিত্ত সমাজের নীতিবোধকে মৃণাল সেন তুলে ধরেন তার খুবই প্রশংসিত দুটি ছবি এক দিন প্রতিদিন (১৯৭৯) এবং খারিজ (১৯৮২) এর মাধ্যমে। খারিজ ১৯৮৩ সালের কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছিল।
১৯৮০ সালের চলচ্চিত্র আকালের সন্ধানে। কীভাবে ১৯৪৩ এর দুর্ভিক্ষের কাল্পনিক কাহিনী মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় সেটাই ছিল এই চলচ্চিত্রের সারমর্ম। আকালের সন্ধানে ১৯৮১ সালের বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার হিসাবে রুপোর ভালুক জয় করে। মৃণাল সেনের পরবর্তীকালের ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য মহাপৃথিবী (১৯৯২) এবং অন্তরীন (১৯৯৪)। এখনও অবধি তার শেষ ছবি আমার ভুবন মুক্তি পায় ২০০২ সালে। মৃণাল সেন বাংলা ভাষা ছাড়াও হিন্দি, ওড়িয়া ও তেলেগু ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন।
৪। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তপন সিংহের অবদান।
বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেনের সঙ্গে যার নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় তিনি হলেন তপন সিংহ। তিনি সাহিত্য থেকে গল্প নিয়ে একের পর এক জনপ্রিয় ও বাণিজ্য সকল ছবি বানিয়েছিলেন। সত্যজিৎ রায়ের পথ ধরেই বাঙলির সমাজ জীবনের খুঁটিনাটি বিভিন্ন অভিজ্ঞতা চলচ্চিত্রের উপাদান করে তুলেছিলেন।
তাঁর প্রথম ছবি অঙ্কুশ নারায়ণ গাঙ্গুলির গল্প সৈনিক অবলম্বনে নির্মিত, কেন্দ্রীয় চরিত্রে একটি হাতি ছিল। তপন সিংহের চতুর্থ ছবি রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প নিয়ে কাবুলিওয়ালা (১৯৫৭)। তপন সিংহ রাতারাতি বাঙালি দর্শক সমাজের মন জয় করে ফেলেন। এছাড়া তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবিগুলি হল ক্ষুধিত পাষাণ (১৯৬০),ঝিন্দের বন্দী (১৯৬১),ক্ষণিকের অতিথি ,সাগিনা মাহাতো (১৯৭০) ,হাটে বাজারে (১৯৬৭), গল্প হলেও সত্যি (১৯৬৬), আরোহী (১৯৬৫), অতিথি (১৯৬৫), জতুগৃহ (১৯৬৪), হাঁসুলী বাঁকের উপকথা (১৯৬২)বাঞ্ছারামের বাগান (১৯৮০)সবুজ দ্বীপের রাজা (১৯৭৯), সফেদ হাতি (১৯৭৭) প্রভৃতি।
বাংলা তথা ভারতীয় সিনেমাকে আন্তর্জাতিক দর্শকের কাছে স্বমহিমায় তুলে ধরতে সাহায্য করেছিলেন তপন সিংহ ।তাঁর সিনেমার চরিত্রগুলোর সঙ্গে বাঙালির সামঞ্জস্য রয়েছে। তাঁর মতো সংবেদনশীল পরিশ্রমী এবং নিষ্ঠাবান বাঙালি পরিচালকের সংখ্যা খুবই কম । এসব কারণে বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তপন সিংহের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
৫. বাংলা চলচ্চিত্র জগতে পরিচালক তরুণ মজুমদারের অবদান আলোচনা করো।
উত্তর: তরুণ মজুমদার বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর পরিচালিত সিনেমাগুলিতে একদিকে যেমন মাটির গন্ধ মেলে, তেমনই অন্যদিকে বাঙালির আবেগ, সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধের নিপুণ প্রকাশ ঘটে। চলচ্চিত্রে তাঁর যাত্রা শুরু হয় ‘যাত্রিক’ নামে একটি ত্রয়ী পরিচালকের দলের অংশ হিসেবে। তাঁদের পরিচালিত ‘চাঁপাডাঙার বৌ’ (১৯৫৪) দর্শকমনে চিরস্থায়ী ছাপ রেখে যায়।
এককভাবে তরুণ মজুমদার অনেক কালজয়ী সিনেমা উপহার দিয়েছেন। ‘বালিকা বধূ’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘গণদেবতা’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’, ‘আপন আমার আপন’, ‘আলো’,’চাঁদের বাড়ি’, প্রভৃতি তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র। তাঁর ছবি সাধারণত গ্রামীণ জীবন, মধ্যবিত্ত সমাজের আবেগ ও প্রেম এবং সাহিত্যের গভীরতাকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছে। সাহিত্যনির্ভর ছবির ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন দক্ষ রূপান্তরকারী। বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর বা শরৎচন্দ্রের লেখাকে তিনি নিখুঁতভাবে সেলুলয়েডে রূপান্তর করেছেন।
তরুণ মজুমদার বহু সম্মান ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তিনি পদ্মশ্রী, জাতীয় পুরস্কার সহ একাধিক ফিল্মফেয়ার ও বিএফজেএ পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর জীবদ্দশায় বাংলা চলচ্চিত্রকে তিনি এমন এক উচ্চতায় নিয়ে যান, যা আজও অনুপ্রেরণা জোগায় তরুণ পরিচালকদের। তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্রগুলি শুধুমাত্র বিনোদন নয়, বরং সামাজিক বার্তা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। ২০২২ খ্রিস্টাব্দের ৪ জুলাই এই কিংবদন্তির প্রয়াণে বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ এক শূন্যতার মুখোমুখি হয়।
৬. বাংলা চলচ্চিত্রে নির্বাক যুগের ছায়াছবির বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
উত্তর: বাংলা চলচ্চিত্রের নির্বাক যুগের সূচনা হয়েছিল হীরালাল সেনের হাত দিয়ে। তিনি প্রথমত সেই সময়ে কিছু মঞ্চ সফল নাটকের দৃশ্যায়ন করেন এবং সেইসঙ্গেই দুটি তথ্যচিত্রও নির্মাণ করেছিলেন,-‘দিল্লি দরবার’ এবং ‘বঙ্গভঙ্গ ও স্বদেশি আন্দোলন’। পরবর্তীকালে ম্যাডান থিয়েটারের মাধ্যমে বাংলা সিনেমার নতুন যুগ শুরু হয়। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ম্যাডানের প্রযোজনায় তৈরি হয় প্রথম বাংলা কাহিনি চিত্র ‘বিল্বমঙ্গল’। এ ছাড়াও ‘বিষবৃক্ষ’, ‘প্রফুল্ল’, ‘জনা’ ইত্যাদি অসংখ্য চলচ্চিত্র ম্যাডানের প্রযোজনায় তৈরি হয়েছিল।
ম্যাডানের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে অরোরা ফিল্ম কোম্পানি, ইন্ডিয়ান সিনেমা আর্টস, তাজমহল ফিল্মস ইত্যাদি আরও একাধিক প্রযোজনা সংস্থা এগিয়ে আসে। অরোরা ফিল্ম কোম্পানির প্রযোজনায় মুক্তি পায় ‘দস্যু রত্নাকর’, ‘বিদ্যাসুন্দর’ ইত্যাদি সেকালের বিখ্যাত চলচ্চিত্র। তাজমহল ফিল্ম কোম্পানির বিখ্যাত প্রযোজনা ‘আঁধারে আলো’ এবং ‘মানভঞ্জন’।
বাংলা সিনেমার সেই প্রথম যুগ অর্থাৎ নির্বাক যুগের বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করতে গেলে বলা যায়-
প্রথমত, শুরুর যুগের সেই বাংলা সিনেমায় পৌরাণিক কাহিনি এবং ধর্ম বেশি গুরুত্ব পেত। ভক্তিরসের মাধ্যমে দর্শক মনোরঞ্জনের চেষ্টা করা হত।
দ্বিতীয়ত, নাটকের সঙ্গে বাংলা সিনেমার যে ঘনিষ্ঠ সংযোগ তা বাংলা চলচ্চিত্রের সেই সূচনা পর্বেই স্থাপিত হয়েছিল। বাংলা নাটকের অভিনেতা এবং পরিচালকদেরকে বাংলা সিনেমায় প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করতে দেখা যেত।
তৃতীয়ত, সমকালের বাংলাদেশ সামাজিক এবং রাজনৈতিক কারণে উত্তাল হলেও বাংলা চলচ্চিত্রে তার কোনো প্রকাশ দেখা যায়নি। সিনেমার নির্মাণ মূলত হয়েছিল দর্শক মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্য নিয়ে।
নির্বাক যুগের শেষপর্বে গল্প এবং উপন্যাস নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রবণতা শুরু হয়েছিল।
